শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: ভারতে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির নাম ঘোষণা করেছে প্রধান বিরোধীদল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। বিজেপি’র সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকের পর শুক্রবার সন্ধ্যায় পার্টি প্রেসিডেন্ট রাজনাথ সিং প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে মোদির নাম ঘোষণা করেন।
আদভানি, সুষমা ছাড়াও সংসদীয় বোর্ডের আরো অনেকেই মোদির বিপক্ষে ছিলেন। সেকারণে গত কয়েক দিনে সেইসব নেতার সঙ্গে বৈঠক করে তাদেরকে একমত করার চেষ্টা চলেছে। বিজেপি’র সংসদীয় বোর্ডের নেতৃস্থানীয় সদস্য লালকৃষ্ণ আদভানি এবং সুষমা স্বরাজের ঘোর আপত্তি উপেক্ষা করেই মোদিকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত দেয় রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)। তবে সংবাদদাতারা বলছেন, দলের ভেতরে ছাড়াও ভারতের মধ্যবিত্ত এবং ব্যবসায়িক শ্রেণীর কাছে মোদির জনপ্রিয়তা ব্যাপক। যার কারণে তিনি দুইবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন।
সম্প্রতি বিদেশি বিনিয়োগকারী এবং কূটনীতিকরাও তাকে সমীহ করছেন। তাছাড়া, দক্ষ এবং দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসক হিসাবেও নাম কুড়িয়েছেন মোদি। প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী হিসাবে তার নাম মূলত দু’টি কারণে চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম। প্রথমত, তিনি দলের জনপ্রিয় নেতা। বিজেপি নেতা-কর্মীদের বেশিরভাগই তাকে প্রার্থী হিসাবে চেয়েছেন। দ্বিতীয়ত, সঙ্ঘ পরিবারকে মোদি জানিয়েছিলেন, তাকে প্রার্থী করা হলে হিন্দুত্ববাদী কর্মসূচিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেবেন তিনি। আরএসএস চায়— রামমন্দির নির্মাণ, সংবিধানের ৩৭০ ধারা (জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা) বিলোপ ও অভিন্ন দেওয়ানি বিধি এই ৩ টি বিষয়কে বিজেপি ফের সামনে নিয়ে আসুক।
২০০১ সাল থেকে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দীর্ঘদিন থেকে বিজেপি’র উদীয়মান তারকা হিসাবেই দেখা হচ্ছিল। গত জুনে তিনি আগামী বছরের নির্বাচনের জন্য পার্টির প্রচারাভিযানের নেতৃত্বে আসেন। আগামী নির্বাচনে বিজেপি’র জয় ছিনিয়ে আনতে চেষ্টার কোনো ত্রুটি করবেন না বলেও এক বিবৃতিতে জানান তিনি। এর পরপরপই দেশকে বর্তমানের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা থেকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টায় দেশবাসীর আশীর্বাদ কামনা করেন মোদি।
গুজরাটকে ভারতের সমৃদ্ধশালী রাজ্যে পরিণত করায় কৃতিত্বের দাবিদার মোদি। কিন্তু ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গা রোধে যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়ার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। মুসলিম বিদ্বেষী ওই দাঙ্গায় হাজার হাজার মুসলমান নিহত হয়। হিন্দুদের বর্বর হত্যাকাণ্ড চলে মুসলিমদের ওপর। সেই দাঙ্গায় হিন্দুদের পৃষ্ঠপোষক নরেন্দ্র মোদির নাম দেশের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে ঘোষণাকে তাই মুসলিমদের জন্য উৎকণ্ঠার কারণ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।