মস্কোর স্থানীয় সময় সকাল ৫টা ৫৫ মিনিটে ইউক্রেনে সামরিক হামলার ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর কয়েক মিনিট পরেই ইউক্রেনে প্রথম গোলা নিক্ষেপ হয়। একে একে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে রাজধানী কিয়েভে জরুরি সাইরেন বাজানো হয়।
রুশ সেনা অভিযান শুরু হওয়ার পর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সাড়া-শব্দহীন সড়কগুলোতে টহল দিচ্ছে সামরিক বাহিনী। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাইরে বের হচ্ছেন না। ঘুম থেকে জেগে দিশেহারা হয়ে পড়েন অধিবাসীরা। হামলা হয়েছে, এটা বুঝতে পেরে যার সঙ্গে যা সম্ভব নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটেন।
এতে এক্সপ্রেসওয়ে বা মহাসড়কগুলোতে গাড়ির দীর্ঘ যানজট লেগে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে জনগণের আতঙ্কের কথা ফুটে উঠেছে। অনেকে বলছেন, হামলা হওয়ায় বোমাবিষয়ক আশ্রয় কেন্দ্রে ও বেসমেন্টে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন মানুষ। কিয়েভে অবস্থানরত গার্ডিয়ানের সাংবাদিক লুক হার্ডিং টুইটারে জানাচ্ছেন, রাস্তায় খুব কম মানুষ দেখা যাচ্ছে। হামলার খবর শুনে কিয়েভ ছেড়ে যাওয়া মানুষের ভিড়ে বিভিন্ন মহাসড়কে ভোরে যানজট লেগে যায়।
যে যেভাবে পারেন, সাজানো সংসার, ঘরবাড়ি পেছনে রেখে অন্যত্র চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ভবিষ্যৎ শঙ্কার কথা ভেবে খাবার ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে অনেকেই ভিড় করেন সুপার মার্কেটগুলোতে, কেউ আবার এটিএম বুথ থেকে অর্থ তুলে নেন। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় মানুষের আনাগোনা কমে যায়। এদিকে ইউক্রেনে থাকা বিদেশি নাগরিকরাও পড়ছে নানা রকম বিপদে।
ইউক্রেন পুলিশ বলছে, রাশিয়ার বিমান হামলায় ইউক্রেনের সাত নাগরিক নিহত হয়েছেন। ইউক্রেনের সামরিক স্থাপনা পোডিলস্ক ও মারিয়াপোল এলাকায় এ বোমা হামলা হয়েছে। এসব এলাকায় নিখোঁজ অনেকে।
ইউক্রেনের রাজধানী শহরে থাকা এক পর্যটক সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, বিমান হামলার সরকারি সতর্কতামূলক সাইরেন বাজতেই তাকে বের করে দিয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। এরকম আরও অনেক পর্যটককে মালপত্রসহ ?কিয়েভের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। অনেকে বলছেন, এই পরিস্থিতিতে তারা কোথায় যাবেন, কী করবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না। কেউ আবার মোবাইল ফোনে নেটওয়ার্ক সংযোগ হারিয়ে ফেলার কথাও বলছেন।
বিবিসির পূর্ব ইউরোপের প্রতিনিধি সারাহ রেইনসফোর্ড ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলের ক্রামাতোরস্ক শহর থেকে খবর সংগ্রহ করছেন। সারাহ রেইনসফোর্ড বলেন, সামনে কী হবে, তা ভেবে শহরটির বাসিন্দারা শোকাহত ও আতঙ্কিত। কিয়েভের পরিস্থিতি সম্পর্কে এখনো স্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
Leave a Reply