রবিবার, ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:১০

পর্তুগালে গোল্ডেন ভিসা বন্ধের সিদ্ধান্ত

পর্তুগালে গোল্ডেন ভিসা বন্ধের সিদ্ধান্ত

শীর্ষবিন্দু নিউজ, লিসবন / ৮৬
প্রকাশ কাল: বুধবার, ৮ মার্চ, ২০২৩

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাইরে থেকে আসা কোনও দেশের নাগরিককে আর ‘গোল্ডেন’ ভিসার আওতায় স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দেবে না পর্তুগাল।

দেশটির সরকার বলছে, আবাসন সংকটের কারণে গোল্ডেন ভিসা বন্ধের এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই এটি বন্ধে পর্তুগালকে চাপ দিয়ে আসছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। কারণ এই ভিসার মধ্য দিয়ে অর্থপাচারের সুযোগ তৈরি হয় বলে মনে করে ইইউ। দ্য ফরচুন

গোল্ডেন ভিসার আওতায় পাঁচ লাখ ইউরো বিনিয়োগ করলে শেনজেনভুক্ত দেশে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পেতেন বিদেশি ধনী নাগরিকরা। ২০১২ সালে এই ভিসা চালু করে পর্তুগাল। গত ১২ বছরে অন্তত ১২ হাজার বিনিয়োগকারী এই সুযোগ গ্রহণ করেছেন।

ফলে বিনিয়োগকারীরা নিজে এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে বসবাসের বৈধতা পেয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের চাপে গোল্ডেন ভিসা থেকে সরে আসতে হচ্ছে পর্তুগালকে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্তোনিও কস্তা জানিয়েছেন, এই ভিসা প্রোগ্রামটি ১৬ মার্চ শেষ হবে।

বিনিয়োগের সুযোগ দিয়ে ধনী বিদেশিদের আকৃষ্ট করতে পর্তুগালের নেয়া সিদ্ধান্তটির বিরোধিতা শুরু থেকে করে আসছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সোশ্যালিস্ট পার্টির সদস্য আনা গোমেস তিনি বলেন, অবশেষে গোল্ডেন ভিসা যে বাতিল করা হচ্ছে, এটা বেশ ভালো সিদ্ধান্ত। পর্তুগালের এমন ভিসা চালু করা উচিত ছিল না।

এই ভিসা অর্থপাচারকে উৎসাহিত করতো জানিয়ে গোমেস বলেন, এর মধ্য দিয়ে অপরাধী ও সন্ত্রাসী সংগঠনের অনেকে বৈধভাবে শেনজেন জোনে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছে।

বিনিয়োগ-বান্ধব দেশ হিসেবে খ্যাতি আছে পর্তুগালের। এক দশক আগেও পর্তুগালের অর্থনীতি এতোটা ভালো ছিল না। মূলত বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে অর্থনীতিকে চাঙা করতেই গোল্ডেন ভিসার সুযোগ দিয়েছিল দেশটি। তার কিছুটা সুফলও অবশ্য মিলেছে।

কিন্তু বিনিয়োগের কথা বলা হলেও নতুন প্রতিষ্ঠান কিংবা কর্মসংস্থান তৈরি না করে পর্তুগালের রাজধানী লিসবন এবং আশপাশের এলাকায় বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। যাদের বেশিরভাগই হলেন চীনের।

তারপরে আছে ব্রাজিলিয়ান, তুর্কি, দক্ষিণ আফ্রিকান এবং রাশিয়ানরা। এই ভিসা সুবিধার মধ্য দিয়ে প্রায় ৭০০ কোটি ইউরো অর্থ যোগ হয়েছে পর্তুগালের অর্থনীতিতে। এই অর্থের ৯০ ভাগ বিনিয়োগ হয়েছে রিয়েল এস্টেট বা আবাসন খাতে।

পর্তুগিজ ইমিগ্রেশন অ্যান্ড বর্ডার সার্ভিসের পরিসংখ্যান বলছে, কর্মসংস্থান তৈরিতে মাত্র ২২টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। ফলে গত ১০ বছরে কর্মসংস্থান হয়েছে মাত্র ২৮০ জনের।

গোল্ডেন ভিসার মাধ্যমে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দেয়ার প্রক্রিয়াটি বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্তে হতাশা জানিয়েছেন পর্তুগিজ অ্যাসোসিয়েশন অব রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারস অ্যান্ড ইনভেস্টরস।

সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট হুগো সান্তোস ফেরেইরা বলেন, এই সিদ্ধান্ত পর্তুগালে বিনিয়োগে আগ্রহী সব বিদেশিদের ওপর আক্রমণ। এর মধ্য দিয়ে পর্তুগাল তার বিশ্বাসযোগ্যতা এবং বিনিয়োগ-বান্ধব দেশ হিসাবে সুনাম হারাবে বলেও মনে করেন এই আবাসন ব্যবসায়ী।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
All rights reserved © shirshobindu.com 2022