রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪১

সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে কোন পক্ষই জয়ী হতে পারেনি

সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে কোন পক্ষই জয়ী হতে পারেনি

শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে প্রকৃতপক্ষে জয়ী হয়নি কোন পক্ষই। গতকাল ভারতের দ্য হিন্দু পত্রিকার সম্পাদকীয়তে এসব কথা বলা হয়েছে। নো রিয়েল উইনারস ইন বাংলাদেশ শীর্ষক ওই সম্পাদকীয়তে বলা হয়, যেমনটা আন্দাজ করা হয়েছিল ঠিক সে রকমভাবেই বাংলাদেশে নির্বাচন হয়েছে। বিএনপি ও তার ১৮ দলীয় জোট এ নির্বাচন বর্জন করেছে। হয়েছে ব্যাপক সহিংসতা। অনেক প্রাণহানি হয়েছে। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সম্পদের।

আর নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচন নিয়ে কয়েক দিনে নিহত হয়েছে ৩০ জন। নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলোর নেতাকর্মীরা নির্বাচনের দিনে পুড়িয়ে দিয়েছে ভোটকেন্দ্র। নির্বাচন কমিশন বলেছে, ভোট পড়েছে শতকরা ৪০ ভাগের সামান্য কম। ২০০৮ সালে ভোট পড়েছিল শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ। এটা ছিল বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ভোট। এতে ভূমিধস বিজয় পান শেখ হাসিনা। এবারের ভোট তার ধারে কাছেও যায় নি। এবার একটি ভোটও পড়ার আগে আওয়ামী লীগ নিশ্চিত ছিল তারা বিজয়ী। জাতীয় সংসদের অর্ধেকের বেশি আসনে তাদের কোন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। বাকি আসনগুলোতে আওয়ামী লীগ বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছে তাদেরই ভিন্নমতাবলম্বীদের পক্ষ থেকে।

এভাবে তারা জিতেছে আরও ১১০টি আসন। এতে তারা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। যে পরিমাণ ভোট পড়েছে তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি চলমান অস্থিরতা কঠোর হস্তে দমনের নির্দেশ দিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষকে। তবে শেখ হাসিনাকে অবশ্যই জানতে হবে যে, এ নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে যে প্রশ্ন রয়েছে তা সহজেই শেষ হয়ে যাবে না। দক্ষিণ এশিয়ায় সামাজিক সূচকে ভাল করার জন্য এ দেশটি কঠোর কাজ করেছে। দারিদ্র্য দূরীকরণ, অপুষ্টি, শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ।

কিন্তু সীমাহীন রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা সে অর্জনকে নষ্ট করে দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র সহ অনেক দেশ ও সংস্থা বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করে একটি নতুন নির্বাচন দেয়ার দাবি জানিয়েছে। কিন্তু সে দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, বিএনপি যদি সহিংসতা ও সন্ত্রাস বন্ধ করে তবেই বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপ হতে পারে। একই সঙ্গে তাদের নিষিদ্ধ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গ ছাড়তে হবে। রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা যদি প্রশমিত না হয় তাহলে বাংলাদেশে একটি মধ্যবর্তী নির্বাচন প্রয়োজন হতে পারে।

এখন সময় এসেছে আওয়ামী লীগের এ সত্যটি বোঝার যে, ইসলামপন্থিদের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই ভাল, কিন্তু রাজনৈতিকভাবে মেরুকরণ করে তারা সহজে জিততে পারবে না। এক্ষেত্রে দু’টিই দরকার। রাজপথের সহিংসতা বাদ দিয়ে রাজনৈতিক মতবিরোধ প্রকাশের জন্য আরও ভাল বিকল্প পন্থা খোঁজা উচিত বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার। ইসলামপন্থিদের সঙ্গে তার রয়েছে দমরম মহরম। তবে তাকে পাকিস্তানের উদাহরণ দেখতে হবে। সেখানে ধর্মীয় কট্টরপন্থিদের সঙ্গে জোট গড়লে কি পরিণতি হয় তার উদাহরণ রয়েছে।

বাংলাদেশের নির্বাচনকে নয়া দিল্লি সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। ভারত বলেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছেন। বাংলাদেশের প্রগতিশীল ও উদার শক্তিকে ভারত যদি সত্যিকার অর্থে সহায়তা করতে চায় তাহলে অচলাবস্থা কাটাতে তাদেরকে অবশ্যই আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে ব্যবহার করতে হবে।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025