নিউজ ডেস্ক: রেললাইনের ওপর এবং উভয়পাশে ২০ ফুট জায়গার মধ্যে কোনো কাঁচাবাজার, অস্থায়ী দোকান, বস্তি-ঝুপড়ি ও হকার বসা সম্পূর্ণ অবৈধ। ‘দি রেলওয়েজ অ্যাক্ট-১৮৯০’ এর ১২২, ১২৪, ১২৫, ১২৬, ১২৭, ১২৮ ধারা অনুযায়ী এটি দণ্ডনীয় অপরাধও।
কিন্তু বাস্তবচিত্রটা পুরোপুরি উল্টো। ‘অবৈধ ও দণ্ডনীয়’ বিষয়টি যেন কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ। আর আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাতেই যেন রাজধানীর জুরাইনে রেললাইনের পাশে বসেছে বিশাল বাজার, যেখানে লাইনের উভয়পাশে ২০ ফুট দূরে থাক, বাস্তবে ২ ফুট জায়গায়ও খালি নেই।
সবচেয়ে অবাক করার বিষয়, ‘অবৈধ ও দণ্ডনীয়’ আইন সম্বলিত বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তির সাইনবোর্ডটি যেখানে টাঙ্গিয়ে দিয়েছে, ঠিক তার নিচেই বসেছে কাঁচাবাজার। শুক্রবার সকালে রাজধানীর জুরাইন রেললাইন বাজার সরেজমিনে ঘুরে এই দৃশ্য দেখা যায়।
জুরাইনে বাজার করতে আসা সুবেন বিশ্বাস রেললাইনের উপর বাজারের বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, আমি সচরাচর এখানে বাজার করি না। ভিতরে বাজার আছে, সেখান থেকে করি। এখানে বাজার করাটা খুব রিস্কি। কারণ যেকোনো সময় ট্রেন এসে পড়ে।
‘তাছাড়া সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় হলো রেললাইনের দুইপাশে বাজার যেভাবে সারিবদ্ধভাবে বসানো হয়েছে, তাতে আপনি মুহূর্তেই বের হয়ে যেতে পারবেন না।কিছু জায়গায় ১০-১৫টা দোকানের পর বের হওয়ার জায়গা রাখা হয়েছে।’
অনেক সময় দেখা যায়, ট্রেন আসলে মানুষ নিরাপদ জায়গায় যাওয়ার জন্য ছুটোছুটি করতে থাকে। একটু বেখেয়াল হলেই সাক্ষাৎ মৃত্যু, যোগ করেন সুবেন বিশ্বাস।
ঢাকা রেলওয়ে থানা, ট্রাফিক, প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে রেললাইনের পাশে বসা বাজার এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় গত এক বছরে ১৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রেললাইনের ওপর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রায় সবময়ই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঝটিকা অভিযান পরিচালনা করে কিন্তু চূড়ান্ত কোনো ফলাফল পাওয়া যায় না। কারণ, উচ্ছেদের দুই-একদিন পরই স্থানীয় প্রভাবশালীদের মদদে আবার যে যার অবস্থানে বাজার নিয়ে বসে পড়ে।