শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর প্রথম জানাজা মালয়েশিয়ায় সম্পন্ন হয়েছে। দেশটির জাতীয় মসজিদ নিগারায় বাদ জোহর জানাজা অনুষ্ঠিত হয় বলে বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার জানিয়েছেন।
জানাজায় মালয়েশিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশ নেন বলে জানা গেছে। জানাজার পর কোকোর মরদেহ ইউনিভার্সিটি মালায়া মেডিকেল সেন্টারের হিমঘরে রাখা হয়েছে। কোকোর মরদেহ দেশে আনতে মালয়েশিয়া যাওয়া তাঁর ছোট মামা শামীম এস্কান্দার ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলীও জানাজায় অংশ নেন। গতকাল শনিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কোকো মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৪ বছর।
পারিবারিক ও বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, আরাফাত রহমান গতকাল সকালে বুকে ব্যথা অনুভব করেন। দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স ডেকে তাঁকে মালয়েশিয়ার ন্যাশনাল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। বাংলাদেশ সময় বেলা পৌনে দুইটার দিকে মালয়েশিয়া থেকে ঢাকায় পরিবারের সদস্যদের তাঁর মৃত্যুর খবর জানানো হয়। আড়াইটার দিকে এই দুঃসংবাদ নিয়ে গুলশানে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে যান তাঁর ভাই সাইদ এস্কান্দারের স্ত্রী নাসরিন সাইদ ও শামীম এস্কান্দারের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা।
গুলশান কার্যালয়ের সূত্রগুলো জানায়, ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে খালেদা জিয়া প্রথমে নির্বাক হয়ে যান। এরপর তিনি অঝোর কান্নায় মুষড়ে পড়েন। এর কিছুক্ষণ পর লন্ডন থেকে বড় ছেলে তারেক রহমান মাকে ফোন করেন। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আরাফাত রহমানের শাশুড়ি পরিবারের কয়েকজন সদস্যসহ এসে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন। বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে আরাফাত রহমানের শাশুড়ি কাঁদতে কাঁদতে কার্যালয় থেকে বের হন।
এক-এগারোর পটপরিবর্তনের পর ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা সেনানিবাসের মইনুল সড়কের বাড়ি থেকে মায়ের সঙ্গে আরাফাত রহমানও গ্রেপ্তার হন। পরে ২০০৮ সালের ১৭ জুলাই প্যারোলে মুক্তি পান এবং পরদিন চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে যান। সেখান থেকে পরে মালয়েশিয়ায় গিয়ে স্ত্রী শর্মিলা রহমান ও তাঁদের দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান, জাহিয়া রহমানসহ বসবাস করছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, আয়কর ফাঁকি, চাঁদা দাবির অভিযোগে ছয়টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে মানি লন্ডারিং আইনে করা একটি মামলার রায়ে তাঁর ছয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মরদেহ মঙ্গলববার দুপুরে দেশে আনা বলে আশা করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়েই কোকোর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে হাজার হাজার বিএনপি নেতাকর্মী অংশ নেয়। এছাড়া জানাজায় অংশ নিতে সিঙ্গাপুর থেকেও বিএনপি নেতাকর্মীরা মালয়েশিয়ায় এসেছেন বলে জানা গেছে।
মালয়েশিয়া বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন জানান, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল নয়টা ৪০ মিনিটে মালয়েশিয়ার এয়ারলাইন্সের এমইচ ১০২ ফ্লাইটে কোকোর মরদেহ ঢাকায় পাঠানো হবে। মোশাররফ জানান, ইতোমধ্যেই এ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিকতা প্রায় শেষ হয়েছে। সরকারি দপ্তরে আরো দুয়েকটি কাজ বাকি আছে যা সোমবারের মধ্যে শেষ করে মঙ্গলবার সকালে মরদেহ দেশে পাঠানো হবে।
এর আগে রোবার দুপুরে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদে নাগাড়ায় কোকো প্রথম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিরা মসজিদে নাগাড়ায় জড়ো হতে থাকেন।
বাংলাদেশ সময় শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার (মালয়েশিয়া সময় ২টা) মারা যান বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো। দুই কন্যা সন্তানের পিতা আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর। দেশ ছাড়ার পর স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে তিনি কুয়ালালামপুর থাকতেন।