সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৩

কান্নায় কী লাভ

কান্নায় কী লাভ

অন্যকিছু ডেস্ক: নিউজ ডেস্ক: দুঃখ, কষ্ট বা আনন্দে মানুষ কেঁদে ফেলে। এই কান্নায় কি কেবলই মনের খেদ বা আবেগের প্রকাশ ঘটে, না কিছু লাভও হয়? গবেষকেরা দাবি করছেন, কান্নায় লাভ আছে। কিন্তু কতটা লাভ, তা তাঁরা বের করতে পারেননি। গবেষকেরা বলেন, যদি মন ভেঙে যায়, তবে চোখের পানি পড়তে দিন। সব সময় আবার হাউ-মাউ করে কেঁদে ওঠাও ঠিক নয়।

দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ১৪০ বছরে কান্নার ওপর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত নিবন্ধের বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ৯৪ শতাংশ ক্ষেত্রেই কান্নাকে গুণ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। অধিক কান্না না হওয়ার সঙ্গে ক্যানসার, অ্যাজমা, উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যার যোগসূত্রও আছে। সম্প্রতি হাফিংটন পোস্টের এক ব্লগে পুরুষদেরও চোখের পানি ফেলার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলা হয়েছে—কান্নায় বেদনা প্রশমিত হয় এবং মানুষকে কোনো সমস্যা থেকে সেরে উঠতে সহায়তা করে।

দুঃখ, রাগ বা আনন্দ—যেকোনো আবেগ থেকে যে কান্না আসে, তা মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্বের গুণ তুলে ধরে। তবে কান্নার বিষয়টি সংস্কৃতি ভেদে ভিন্ন রূপে দেখা যায়। যেমন ইন্দোনেশিয়ার তোরাজায় শোকসন্তপ্ত ব্যক্তি বাদে আর কেউ কাঁদলে এটাকে অস্বাস্থ্যকর, মানসিক সমস্যা ও স্বল্প বয়সে মৃত্যুর পূর্বলক্ষণ হিসেবে ধরা হয়।

তবে নেদারল্যান্ডসের টিলবার্গের গবেষক অ্যাড ভিঙ্গারহোটস ৩৫টি দেশের পাঁচ হাজার ব্যক্তিকে নিয়ে একটি গবেষণা চালিয়েছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, এক বছরে নারী গড়ে ৩০ থেকে ৬৪ বার পর্যন্ত কাঁদতে পারে। পুরুষ ছয় থেকে ১৭ বার পর্যন্ত কাঁদতে পারে। পুরুষের টেস্টোস্টেরন হরমোন কান্না থামিয়ে রাখে। নারী উচ্চমাত্রার প্রোল্যাকটিন হরমোনের কারণে বেশি কান্নাকাটি করে। গর্ভধারণের সময় এই হরমোন বেশি থাকে বলে এ সময় নারীকে বেশি কান্নাকাটি করতে দেখা যায়।

প্রাপ্তবয়স্কদের কান্নার ক্ষেত্রে ধারাবাহিক গবেষণা নেই আর প্রাপ্তবয়স্কের কান্নাকাটির সুফল কী—এ বিষয়টিও নির্দিষ্ট করতে পারেননি গবেষকেরা। মর্মপীড়া মানুষের সহানুভূতিশীল স্নায়ুতন্ত্র বা সিমপ্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম সক্রিয় করে তোলে এবং মানুষের মন বিচলিত হয়ে ওঠে। কিন্তু যখন প্যারাসিমপ্যাথেটিক সিস্টেম যখন সক্রিয় হয়, তখন এ সমস্যা দ্রুত সেরে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষ মনে করে কান্নার ফলে তাঁদের বিচলিত অবস্থা কিছুটা কমে যায়।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা সম্প্রতি কান্না বিষয়ক একটি গবেষণা করেন। তাঁরা ১৫০ জন নারীকে ‘স্টিল ম্যাগনোলিয়াস’ ছবিতে মেয়ের দাফনকৃত্যে মায়ের কান্নার দৃশ্য দেখান। এ দৃশ্য দেখে ৩৩ জন কেঁদে ফেলেন। যাঁরা এ দৃশ্য দেখে কেঁদে ফেলেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের বিচলিত ও কষ্টকর পরিস্থিতি অনুভব করেছেন। গবেষকেরা বলেন, কান্নার ফলে বিচলিত অবস্থা আরও বেড়ে যায়, যা থেকে বেরিয়ে আসতে আরও বেশি সময় লাগে।

গবেষকেরা বলেন, মানুষ যখন অসহায় বোধ করে, তখন বেশি কাঁদে। কেঁদে যদি অবস্থার উন্নতি ঘটে, তখন সে স্বস্তি বোধ করে।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024