শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: দেশের অস্থিতিশীলতা সমাধানে পদক্ষেপ নিতে সেনাবাহিনীর দেওয়া ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম প্রত্যাখ্যান করেছেন মিশরের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি। দেশ ও জনগণের স্বার্থরক্ষায় পরিকল্পনামতো এগিয়ে যাবেন মুরসি। মঙ্গলবার সকালে প্রেসিডেন্ট কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা সাফ জানিয়ে দেয়া হলো।
সোমবার দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, সরকার ও বিরোধীরা যদি জনগণের স্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থ হয় তবে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করবে। যদিও যেকোনো ধরনের সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কা নাকচ করে দিয়েছে সেনাবাহিনী। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর আলটিমেটামের প্রেক্ষিতে মিশরের রাস্তায় রাস্তায় মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে সরকার সমর্থক ও বিরোধীরা। এছাড়াও বড় ধরনের সহিংসতারও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত বছর নির্বাচনের মাধ্যমে দেশটির প্রথম গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন এক সময়ের নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্য মোহাম্মদ মুরসি। কিন্তু মুসলিম ব্রাদারহুডের ক্ষমতাগ্রহণকে সহজভাবে নিতে পারেনি ধর্মনিরপেক্ষ বিরোধীদলগুলো। সরকার বিরোধীদের অভিযোগ অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ আর নিরাপত্তা সমস্যা কাটিয়ে উঠতে ব্যর্থ হয়েছেন মুরসি। অন্য দিকে মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থকদের দাবি, পাশ্চাত্যের ইশারায় একটি গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাতে ষড়যন্ত্র করছে স্বৈরশাসক হোসনি মোবারকপন্থিরা।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, গত সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া এ দফার সরকারবিরোধী আন্দোলনে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৬ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর আগে সোমবার সরকারবিরোধীদের সংগঠন তামারুদ এর পক্ষ থেকে সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট মুরসি যদি পদত্যাগ না করে মধ্যবর্তী নির্বাচনের আয়োজন না করেন তবে তাকে গৃহযুদ্ধ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে হবে। এরপরই দেশের স্বার্থরক্ষায় পদক্ষেপ নিতে প্রেসিডেন্ট মুরসিকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয় সেনাবাহিনী।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, রোববার মিশরজুড়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ করেছে দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোর সমর্থকরা। পাল্টা সভা-সমাবেশ করে চলেছে মুরসির দল মুসলিম ব্রাদারহুডও। এ দিকে মঙ্গলবার সকালে দেশটির রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা মেনা জানিয়েছে, সরকারবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ কামেল আমর। এর আগে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার জের ধরে পদত্যাগ করেন মুরসি সরকারের পাঁচ মন্ত্রী। গত সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া সরকারবিরোধী আন্দোলন রোববার থেকে জোরদার হতে শুরু করে। অবশ্য সোমবার মুরসিকে পদত্যাগের জন্য এবং অন্তবর্তীকালীন নির্বাচন সম্পন্ন করতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য মঙ্গলবার (আজ) দুপুর তিনটা পর্যন্ত সময় বেধে দেয় সরকারবিরোধীরা। এরপর রাজধানী কায়রোয় ব্রাদারহুডের প্রধান কার্যালয়ে হামলা চালায় ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোর সমর্থক ও ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের সমর্থকরা।
Leave a Reply