শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:৩৪

যাদের কাছে ঈদের অর্থ আলাদা

যাদের কাছে ঈদের অর্থ আলাদা

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

নুরুল আমিন: ঈদের নামাজ শেষ। দাঁড়িয়ে আছি মগবাজারের ওয়ারলেস গেটের মসজিদের পাশে। হঠাৎ হাতে নরম হাতের ছোঁয়া। পাশ ফিরে, দেখি আট/নয় বছরের একটি ছেলে, গায়ে রং চটা ছেড়া গেঞ্জি, চুলগুলো রুক্ষ, এক রাশ ধুলো ভরা পা। আমার বা হাত ধরে বলছে, ১০টা টাকা দ্যান স্যার।

মনটা কেমন করে ওঠে, জিজ্ঞেস করি, কি নাম তোর- বাদশা। হেসে উঠি, একি হাল বাদশার! বৈষম্যহীনতার মূলমন্ত্রের এই মহা উৎসবে বাদশা আজ ভিখারি। সৈন্য নেই, সামন্ত নেই বাদশা আজ অন্যের করুণার পাত্র। বাদশা নামটার কি অবিচার। টাকা দিয়ে কি করবি বাদশা? বইনরে লইয়্যা চটপটি  খায়াম। সরল স্বীকারোক্তি! পাঞ্জাবির পকেটে হাত দিয়ে নতুন চকচকে ২০ টাকার একটা নোট বাদশার দিকে এগিয়ে দেই। বাদশার চোখ ঝলমল করে ওঠে। টাকাটা নিয়েই চলে যায় ভিখারি বাদশা।

ঈদের এই দিনে এমন অনেক বাদশা রাজধানীর ওলি-গলির মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে, মানুষের দয়া-দাক্ষিণ্যের জন্য। ওদের কাছে ঈদের অর্থ আলাদা। নামাজ শেষে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা পাঁচ/দশ টাকা দিচ্ছেন। ঝলমল করে উঠছে ওদের কচি মুখ, অর্থময় হয়ে উঠছে ওদের  ঈদ। তিলোত্তমা এই রাজধানীতে প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজারেরও বেশি শিশু ভিখারি শুক্রবার বাড়তি টাকা পাওয়ার আশায় বিভিন্ন মসজিদ ও ঈদগাহের সামনে হাত পাতছে। মুসল্লিরাও ওদের ফেরাচ্ছেন না।

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের গেটে কথা হয় বরিশালের জয়নালের সঙ্গে। জয়নাল বলে, আজ ঈদ। তাই সবার মন ভালা। আজ অনেক টাকা ভিক্ষা পাইছি। বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা মো. মাঈন উদ্দিন। ঈদের নামাজ পড়তে এসেছেন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। তিনি বলেন, ধনি-গরিব সবার জন্যই ঈদ, যারা অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল, তারা যেন ঈদের আনন্দটা উপভোগ করতে পারে- সেজন্য প্রত্যক বিত্তবানদের উচিত, ওদের পাশে দাঁড়ানো। যাতে ওরাও ঈদের দিনে ভালো-মন্দ কিছু খেতে পারে। মুসলমানের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবে বাদশার মতো এমন হাজারো শিশু ভিখারিরা খুশি হয় অন্যের দানে।

 




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024