প্রিয় এই পৃথিবীতে যে আর কখনো ফেরা হবে না, আগেই তা জানিয়ে দিয়েছেন আয়োজকরা। তারপরও মঙ্গলে বসতি গড়ার অভিযানে যোগ দিতে এক লাখেরও বেশি দরখাস্ত জমা পড়েছে মার্স ওয়ানের দপ্তরে।
মার্স ওয়ানের ঘোষণা অনুযায়ী, এই ওয়ানওয়ে টিকেটে যারা মঙ্গলে যাবেন, তাদের আর কোনোদিনই পৃথিবীতে ফেরা হবে না। বরং মহাকাশে মানুষের বসতি ছড়িয়ে দিতে লালগ্রহ মঙ্গলে তাদের গড়তে হবে এক নতুন পৃথিবী। মঙ্গেলে বেঁচে থাকার মতো উপযুক্ত পরিবেশও তাদেরই তৈরি করে নিতে হবে।
এ অভিযানে অংশ নিতে আবেদন করতে পারছে প্রাপ্তবয়স্ক, অর্থাৎ ১৮ বা তার বেশি বয়সী এবং শারীরিকভাবে সক্ষম যে কেউ। তবে এজন্য নিজের দেশের মাথাপিছু আয়ের ভিত্তিতে পাঁচ থেকে ৭৫ ডলার পর্যন্ত ফি দিতে হচ্ছে আবেদনকারীদের।
২০১৫ সালের জুলাইয়ে আবেদনকারীদের মধ্যে থেকে প্রাথমিক বাছাইয়ের মাধ্যমে চার জন করে মোট ছয়টি দল গঠন করা হবে। এরপর মঙ্গল অভিযানের উপযুক্ত করে তুলতে ৮ বছর ধরে প্রশিক্ষণ চলবে তাদের।
মার্স ওয়ানের পরিকল্পনা অনুযায়ী, মঙ্গল মিশন সফল করতে ২০১৪ সালে একটি যোগাযোগ উপগ্রহ পাঠানো হবে মঙ্গলের কক্ষপথে। ২০১৮ সালে রোবট পাঠিয়ে বসতির উপযুক্ত স্থান নির্ধারণ করা হবে। এরই মধ্যে খাবার, রসদ আর জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম নিয়ে উড়ে যাবে একাধিক নভোযান।
মঙ্গলের বুকে প্রথম বসতিস্থাপনকারীদের জন্য শক্তির যোগান দিতে সৌর প্যানেল বসানো এবং গ্রহের পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে পানি ও অক্সিজেন তৈরির আয়োজনও সেরে ফেলা হবে। সব ঠিক থাকলে চারজন নভোচারী মঙ্গলের উদ্দেশে যাত্রা করবেন ২০২২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর। প্রায় ১০ মাস পর তারা পা রাখবেন মঙ্গলের মাটিতে।
বছর দুয়েক আগে মঙ্গল অভিযানের এই পরিকল্পনা মাথায় আসার পর নিজের পয়সাতেই কাজ শুরু করেছিলেন মার্স ওয়ানের সিইও ডাচ উদ্যোক্তা ও প্রকৌশলী ব্যাস ল্যান্ডসড্রপ। তবে গত ডিসেম্বর থেকে অনুদান নিয়ে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নেয়ার কাজ শুরু করেছেন তিনি। মঙ্গলে মনুষ্যবাহী প্রথম অভিযানের ব্যয় ধরা হয়েছে ছয় বিলিয়ন ডলার।
ল্যান্ডসড্রপ বলেন, “যখন মঙ্গলে মানুষ যাবে, সেখানে মানষের বসতি হবে, একটি নতুন পৃথিবী গড়ে তুলবেন তারা- তা হবে পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেযে বড় একটি ঘটনা। এই বিজয়ের গল্পটি আমরা পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে চাই।”
Leave a Reply