স্বদেশ জুড়ে: আসন্ন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি জানাতে ২৫ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ অ্যাডভোকেটের সঙ্গে দেখা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।নির্বাচন কমিশন (ইসি) যে কোনো আদলে, যে কোনো ফর্মুলার সরকারের অধীনেই নির্বাচন করতে প্রস্তত বলেও এদিন রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করা হবে।
একই দিন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে অনুমতিও প্রার্থনা করবে ইসি। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক শেষেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে কমিশন। ২৪ জানুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন করতে চায় কমিশন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনার আব্দুল মোবারক, আবু হাফিজ, ব্রি.জে. (অব.) জাবেদ আলী এবং মো. শাহনেওয়াজ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করবেন। নির্বাচন কমিশনের সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিকও সঙ্গে থাকবেন। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠানে বর্তমান গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) সঙ্গে সংবিধানের যে অসামঞ্জস্য রয়েছে তা সংশোধন এনে এরই মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে কমিশন।
এছাড়াও আরপিওর ৯১ (ই) ধারা বাদ দিয়ে ইসি যে সম্পূরক সংশোধনী এনেছে তাও চলতি সপ্তাহে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে শুরু হতে যাওয়া সংসদ অধিবেশনে আরপিও চূড়ান্ত হবে বলে ইসি সূত্র নিশ্চিত করেছে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও গুরুত্বপূর্ণ সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের গত অধিবেশনে সংসদে দাঁড়িয়ে ঘোষণা দিয়েছেন চলতি বছরের ২৪ অক্টোবরেই শেষ হচ্ছে বর্তমান সরকারের মেয়াদ।
এ অবস্থায় ২৫ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির সাক্ষাৎ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে ইসি। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ২৪ জানুয়ারি নবম সংসদ ভেঙে দেওয়া হবে এবং নির্বাচন হবে বর্তমান সরকারের অধীনেই। সংবিধানের ১২৩ (৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংসদ ভেঙে যাওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান রয়েছে। সে হিসেবে নতুন বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে পারে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
প্রধান বিরোধী দলের অভিযোগ আছে, বর্তমান সরকারের (মহাজোট সরকার) অধীনে ‘একতরফাভাবে’ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যদিও ১৮ দলীয় জোট এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ছাড়া নির্বাচনে যাবে না তারা। এমনকি আরপিওর ৯১ (ই) ধারা বাদ দেওয়ায় বর্তমান কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে তারা। এছাড়া বর্তমান কমিশনের বিরুদ্ধে সংসদীয় সীমানা নির্ধারণ, বিএনএফকে নিবন্ধন দেওয়াসহ নানা ইস্যুতে রকিব কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির।
নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় সম্পর্কে বলেন, নির্বাচন কমিশন সংসদ নির্বাচন আগেভাগে করতে চায় না। সরকারের মেয়াদের শেষ পর্যায়েই নির্বাচন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এক্ষেত্রে জানুয়ারিতেই নির্বাচন করা হতে পারে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ সম্প্রতি ইসি কার্যালয়ে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রস্তুত কমিশন।
এক্ষেত্রে দুই ধরনের সরকারের অধীনেই এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর। ২০০৯ সালের ২৫ জানুয়ারি বসেছিল নবম সংসদের প্রথম অধিবেশন। সে অনুযায়ী ২০১৩ সালের ২৬ অক্টোবর থেকে ২০১৪ সালের ২৪ জানুয়ারির মধ্যেই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে কমিশনকে।
Leave a Reply