শীর্ষবিন্দু নিউজ: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেছেন, আন্দোলনরত শিক্ষকদের ‘অন্যায্য’ দাবির মুখে তিনি পদত্যাগ করবেন না। নিজের কার্যালয়ে চতুর্থ দিনের মতো অবরুদ্ধ উপাচার্য শনিবার দুপুরে সাংবাদিকদের একথা বলেন।
অধ্যাপক আনোয়ার বলেন, শিক্ষকদের দাবি অনৈতিক ও অন্যায্য। এই ধরনের দাবির মুখে পদত্যাগ করব না। বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সঙ্কট নিরসনে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চেয়েছেন অবরুদ্ধ উপাচার্য। শিক্ষকরা যে সব অভিযোগ জানিয়েছেন, তা সত্যতা খুঁজতে তদন্তেও আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক আনোয়ার।
জাহাঙ্গীরনগরে সৃষ্ট অচলাবস্থা কাটাতে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগে উপাচার্য একথা বললেন। আন্দোলনত সাধারণ শিক্ষক ফোরাম বিকালে ঢাকায় নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন, সেখানে উপাচার্যকে অপসারণের দাবি তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছে তারা।
এদিকে, বিরোধী দল সমর্থিত শিক্ষকদের বর্জনের হুমকির মধ্যে শনিবার উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে সিনেটের বিশেষ অধিবেশনে এ নির্বাচন হবে। এ নির্বাচনকে ঘিরে নানা জটিলতা দেখা দিলেও যথাসময়ে সিনেট অধিবেশন ও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক জানিয়েছেন।
গত সাড়ে চার বছর ধরে বিএনপি-জাময়াতপন্থী শিক্ষকদের সাদা দল ও আওয়ামী লীগ-বাম সমর্থিত শিক্ষকদের নীল দল- উভয় পক্ষের শিক্ষকরা উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের দাবি করে আসছেন। তাদের দাবির মুখে আহ্বান করা এই অধিবেশনে আসন খালি থাকায় সিনেটের ১০৫ সদস্যের মধ্যে মাত্র ৫০ জন দিয়েই এ উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় ২৫ জন রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচনের আগেই এ অধিবেশন আহ্বান করা হয়েছে। এতে রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রার্থী এবং শিক্ষক সমিতির বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের মধ্যে হয়েছে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সাদা দল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের জন্য আহ্বান করা সিনেট অধিবেশন স্থগিতের দাবি জানান। না হলে নির্বাচন বর্জন করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ১৯৭৩ এর অধ্যাদেশের ১১ (২) ধারা অনুযায়ী উপাচার্য পদে নিয়োগ পান। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ তাকে এই নিয়োগ দেন। অধ্যাদেশের ১১ (১) ধারা অনুযায়ী, একজন নির্বাচিত উপাচার্য নিয়োগের আগ পর্যন্ত তিনি সাময়িকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাজ পরিচালনা করবেন। কিন্তু এরপর সাড়ে চার বছর পার হলেও উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন দেয়া হয়নি।
Leave a Reply