শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:৫৩

ট্যাক্স ফাঁকি রোধে ডিজিটাল অটোমেশন

ট্যাক্স ফাঁকি রোধে ডিজিটাল অটোমেশন

 

 

 

 

 

 

 

 

 

স্বদেশ জুড়ে: সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব বৃদ্ধি ও দ্রুত গ্রাহক সেবা দিতে প্রথমবারের মতো ডিজিটাল অটোমেশন পদ্ধতি ব্যবহার করতে যাচ্ছে ৭টি কর্পোরেশন। ডিজিটাল অটোমেশন পদ্ধতি বাস্তবায়িত হলে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা অনেকাংশে কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দেশের সর্বত্র বসেই গ্রাহক তার হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করতে পারবেন খুব সহজেই। এমনকি গ্রাহক নিজেই জানতে পারবেন তার কত টাকা ট্যাক্স বাকি। নতুন করে কোনো ট্যাক্স ধার্য করা হয়েছে কি না, গ্রাহক তাও জানতে পারবেন এই পদ্ধতির মাধ্যমে। অঞ্চল ভেদে ট্যাক্সের হারও নির্ধারণ করা থাকবে এই ডাটাবেজ প্রোগ্রামে। এ পদ্ধতি বাস্তবায়নের পর অনলাইনে বসেই ট্যাক্সের আপডেট স্ট্যাটাস দেখা যাবে। এ পদ্ধতির সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটাল হোল্ডিং নেমপ্লেট ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হবে হাউজ হোল্ড গ্রাহক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের।

এদিকে অটোমেশন বাস্তবায়নকারী সংস্থা (ইউপিইএইচএসডিপি) এর পরিচালক মো. শাহিন বলেন, সিটি কর্পোরেশন প্রাথমিক কাজ শেষ করেছে। এখন আমরা অটোমেশনের জন্য এডিবি’র আদেশের অপেক্ষায় আছি। কারণ তাদের অর্থায়নেই এ ডিজিটাল পদ্ধতি বাস্তবায়িত হবে। এ সপ্তাহের মধ্যেই এডিবি’র সঙ্গে বসে ঠিক করা হবে কোন পদ্ধতিতে টেন্ডার হবে। তবে এডিবি মতামত না দিলেও আমরা এ সপ্তাহেই টেন্ডার আহ্বান করবো সফটওয়্যার ডেভলপমেন্টের কাজের জন্য। আশা করছি আগামী ৬ মাসের মধ্যে সবার মাঝে নতুন এ সেবা পদ্ধতি চালু হয়ে যাবে।

অটোমেশন পদ্ধতি প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘শুধুমাত্র পদ্ধতি চালু করে দিলেই চলবে না। আগে গ্রাহকদের নতুন এই পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত করাতে আমরা ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করবো। বিভিন্ন জোনে কম্পিউটার দিয়ে দিবো। পরীক্ষামূলকভাবে এটি চালু করার পর আমারা বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানি ও ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করবো যাতে মোবাইল বা ব্যাংকিং পদ্ধতির মাধ্যমে ট্যাক্স আদান প্রদান করা যায়।

ইতোমধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ম্যানুয়েল পদ্ধতির ডাটাবেজের পরিবর্তে কম্পিউটারাইজড পদ্ধতির গ্রাহক ডাটা সংগ্রহের কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু ওয়েব সাইট ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের কাজ বাকি। আগামী ছয় মাসের মধ্যেই সমস্ত কাজ সম্পূর্ণ হবে বলে বাংলানিউজের কাছে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে সিটি কর্পোরেশনের আরবান পাবলিক অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট হেলথ সেক্টর ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট (ইউপিইএইচএসডিপি) অটোমেশন পদ্ধতি বাস্তবায়ন করছে। এশিয়া ডেভলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে এটি বাস্তবায়িত হবে। ৭টি সিটি কর্পোরেশনের জন্য এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা।   প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকার (উত্তর-দক্ষিণ) দুই সিটি কর্পোরেশন এবং চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, রাজশাহী ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এ পদ্ধতির আওতায় আসছে। এসব সিটি কর্পোরেশনের সফলতা বিবেচনা করে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনেও একই পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা হবে।

অটোমেশন পদ্ধতির পরিকল্পনাকারী হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এটি একটি বড় পরিসরের কাজ তাই এ পদ্ধতি বাস্তবায়ন হতে একটু সময় বেশি লাগবে। আমরা ইতোমধ্যে ডাটা কম্পিউটারাইজডের কাজ সম্পন্ন করেছি এখন শুধু সফটওয়্যার ডেভলপমেন্টের কাজ বাকি আছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ আছে যতদ্রুত সম্ভভ এটি সম্পন্ন করা তাই আমরা চেষ্টা করছি আগামী ছয় মাসের মধ্যে সমস্ত কাজ শেষ করে গ্রাহকদের মাঝে এ পদ্ধতির সেবা উন্মোচন করতে।

রাজস্ব আদায়ে অনিয়ম ঠেকাতে এবং আয় বৃদ্ধির জন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের ধারণা এটি বাস্তবায়িত হলে গ্রাহকরা হয়রানিমুক্ত ও সহজ পদ্ধতির মাধ্যমে ট্যাক্স পরিশোধ করতে পারবেন। তখন আর নগর ভবনে এসে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। এমনকি কোনো কুচক্রীমহল অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় করতে পারবে না। অটোমেশন পদ্ধতি চালু হলে ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। একই সঙ্গে ট্যাক্স বাকি থাকারও সুযোগ কমে আসবে। এখন যেমন সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানই ঠিকমতো রাজস্ব দেয় না। তখন আর এ সুযোগ থাকবে না। আবার অনেকে হয়রানির ভয়ে বছরের পর বছর ট্যাক্স না দিয়ে বহাল তবিয়তে পড়ে থাকেন। এটি বাস্তবায়িত হলে সেই সুযোগ আর থাকবে না। ট্যাক্স আদায়ের পরিমাণও বেড়ে যাবে।

 




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024