স্বদেশ জুড়ে নিউজ ডেস্ক: বড় দুই জোটের বাইরে তৃতীয় রাজনৈতিক জোট গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন রাজনীতিবিদরা। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক মঞ্চে গণফোরামের ২০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় রাজনীতিবিরা এ আহ্বান জানান।
গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, আমাদের রাজনীতি রুগ্ণ হয়ে গেছে। এই রুগ্ন রাজনীতি থেকে দেশের জনগণকে বাঁচাতে হলে তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। গ্রামে গ্রামে গিয়ে জনগণকে বোঝাতে হবে এই অসুস্থ রাজনীতি সম্পর্কে। তিনি বলেন, দেশের জনগণ ঐক্য ও নীতিতে অটল থাকলে সব কিছু করা সম্ভব। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা ’৫২, ’৫৪, ’৬৯ ও ’৭১-এ বিজয় অর্জন করেছি। এই আন্দোলনেও আমরা বিজয় অর্জন করবো। আমাদেরকে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে।
আলোচনা সভায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি আসম আবদুর রব বলেন, দুই ‘আপদ-বালা’র হাত থেকে মানুষ মুক্তি চায়। কিন্তু তারা প্রকাশ করতে পারছে না। আমরা তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাই। দুই বালার হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য আমরা লড়াই করবো। দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ হিসেবে আমরা এ লড়াইকে এগিয়ে নিতে চাই। তিনি আরও বলেন, শাসকদের আচরণ দেখলে মনে হয়, আমরা বিজাতীয়দের অধীনে আছি। তার যেন জনগণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে কিছু বলা যাবে না। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আদালতের দোহাই দিচ্ছেন কেন, আগামী সংসদ অধিবেশনেই এই সমস্যার সমাধান করুন।
সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তির উত্থান এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। আমি মনে করি জাতি প্রস্তুত। আপনারা জাতিকে জানান, আপনাদের লক্ষ্যের কথা।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশের ১৬ কোটি মানুষের চোখে স্বপ্ন নেই। আমাদের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। আমরা জানি না নির্বাচন হবে কিনা। নাকি রক্তপাত হবে। এখনই সময় উঠে দাঁড়াতে হবে। দুই নেত্রীর হাতে ১৬ কোটি মানুষ জিম্মি হয়ে থাকতে পারি না। আমাদের সবাইকে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি বলেন, গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ালে দুই নেত্রীর প্রতি মানুষ বিরক্তি প্রকাশ করে। আগামী ১২ই সেপ্টেম্বর সংসদ অধিবেশন শুরু হবে। এর আগেই আপনারা সঙ্কট সমাধানের উদ্যোগ নেন। সাবেক এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ড. কামালের কাছে আমার অনুরোধ, আপনি সংবিধান যেভাবে তৈরি করেছিলেন সেভাবে মুক্তির জন্য একটি সনদ তৈরি করুন। যেন ক্ষমতায় গিয়ে কেউ কারও বাড়ি দখল না করতে পারে, জনগণের সম্পদ লুটপাট করতে না পারে। চুল নিয়ে টানাটানি না হয়। মান্না বলেন, এবার যদি নির্বাচন নিয়ে গণ্ডগোল হয় তাহলে ১/১১ নয়, ২/২২ হবে। আরও বেশি ধ্বংসযজ্ঞ হবে।
বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেন, সমপ্রতি ৫টি সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছে। আরও যদি ৭টি সিটিতে নির্বাচন দেয়া হয় ৭টিতেই হারবে তারা। ৫ সিটিতে বিকল্প পায়নি বলে ভোটাররা বিএনপিকে ভোট দিয়েছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব আমাদেরকে বিকল্প শক্তি দাঁড় করাতে হবে। বিকল্প দিতে যত দেরি হবে ততই জনগণের ক্ষতি হবে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, কলামিষ্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, সমকালের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আবু সাঈদ খান, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমান, সাবেক বিজিএমইএ-এর সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী প্রমুখ।
Leave a Reply