মোহাম্মদ আবুল হোসাইন খান:
ভুমিকা: প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অাল কুরআনের উপর ঈমান আনা ফরজ। সরাসরি আল্লাহর পক্ষ থেকে নাজিলকৃত নির্ভূল কিতাব হিসেবে যেমন বিশ্বাস করা ফরজ, তেমনি এ কিতাব গোটা বিশ্ব মানবতাকে সঠিক পথ দেখিয়ে জান্নাতুল ফেরদাউসে পৌঁছিয়ে দিতে পারে বলেও ঈমান আনা জরুরী। অনেকদিন থেকে এ ব্যাপারে লিখবো লিখবো করে ইরাদা করে ছিলাম, কিন্তু বাস্তবে তা হয়ে উঠেনি। এবার সুদূর আমেরিকার মিশিগান থেকে জনাব ভাই হাবীবুর রহমান তাদের ম্যাগাজিনে একটি লেখা দেওয়ার জন্যে অনুরোধ করায় অবশেষে রাজী হয়ে যাই। অাজ কাগজ কলম হাতে নিয়ে বিসমিল্লাহ করলাম। আল্লাহ তায়ালা ভাইয়ের অনুরোধ ও আমার আবেগকে কবুল করুন।এবং এ লেখা থেকে পাঠক ফায়দামন্দ হলেও শ্রম স্বার্থক মনে করবো।
কুরআন কাদের জন্য: এ নির্ভূল কিতাবখানা বিশ্ববাসীর জনে্য পাঠিয়েছেন রাব্ব। এ জন্য এ কিতাবখানার মূল উপপাদ্য বিষয়বস্তুই হচ্ছে মানুষ বা মানবজীবন। মানবতার জন্যে কিসে কল্যাণ এবং কিসে অকল্যাণ তা বিবৃত করেছেন ্ এ মহ্ান কিতাবে। মানুষ হচ্ছে মেশিন সদৃশ। এ মেশিনটি কিভাবে চললে* অপরাধের * মেশিনটি সুচারুরূপে চলবে তার গাইডলাইন হচ্ছে এটি। যেমন আমরা ঘড়ি, ক্যামেরা, ল্যাপটপ, কম্পিউটার ইত্যাদি কিনলে সাথে ছোট বড় কয়েকটি গাইডবুক বা ডিস্ক দেয় মেশিনটি সঠিকভাবে চালাবার জন্যে। সুতরাং আল্লাহ তায়ালার মানুষ নামের ওয়ান টাইম ইউজড মেশিনটিও সঠিকভাবে চালাবার জন্যে এ কিতাবখানা গাইডলাইন হিসেবে নাযিল করেছেন। কাজেই গোটা বিশ্বমানবতার জন্যে এ কুরআনই হচ্ছে বিশুদ্ধতম, নিখুঁত ও নির্ভূল গাইডবুক। সুরা বাকারার ৩৮ নং আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেছেন- যারা এ কিতাবখানা গাইডবুক হিসেবে সমগ্র জীবন মেনে চলবে তাদের ইহ ও পরকালীন জীবনে অনিরাপত্তা ও দুশ্চিন্তার কারন নেই। সুরা তাহা ১২৩ নং আয়াতে প্রায় সমার্থবোধক কথা আল্লাহ পূন:বার বলেছেন- যারা সরাসরি এ িকতাবের নির্দেশনা যথাযথ অনুসরণ করে তারা দুনিয়ার জীবনে যেমন পথহারা হবেনা তেমনি পরকালে দূর্ভাগাও হবেনা।
এ কিতাব এসেছে বিশ্বমানবতার প্রতিটি সদস্য সরল পথের সন্ধান দিতে, আবার বিপথগামীেদর পথ প্রদর্শন করতে। ডাকছে এ কিতাব বড়ই করুণ সুরে এই বলে এটা হচ্ছে আমার সহজ সরল পথ। এ পথই তোমরা অনুসরণ করো। তাছাড়া অন্য কোন পথ তালাশ করোনা। তা যদি করো তাহলে তার আশে পাশে আরো অসংখ্য বাঁকা পথ রয়েছে যাতে উঠলে পরে তোমাদেরকে আসল পথ থেকে সরিয়ে জাহান্নামের বেমালুম নিয়ে যাবে।
নবী স: বলেছেন এ আয়াতের ব্যাখ্যায় যে প্রতিটি বাঁকা পথের মাথায় একেক কাজের একেক শয়তান লিডার বসে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। এসো আমার পথে, কেউ ডাকছে এই বলে যে আমার ডাকে সাড়া দাও। আমি তোমদেরকে সুন্দরী নারীর দিকে নিয়ে যাবো। আরেকজন ডাকছে এই বলে যে আমার কাছে রয়েছে বিশ্বের উন্নতমানের সূপেয় রেট। অপর কেউ ডাকছে এই বলে যে আমার কথা শুনো আমার কাছে রয়েছে অবিশ্বাস্য হলেও দুনিয়ার সকল চাকচিক্য এবং পয়সার পসার। চলে এসো আমার পথে। এভাবে মানবতার কোমলমতিগুলোকে অংকুরেই ডেকে বিপথগামী করে নষ্ট করে দিচ্ছে শয়তান। কিভাবে শয়তান কুরআন থেকে সরিয়ে রাখা যায় তার জন্যে শয়তানের সকল আয়োজন।
শয়তানের আকীদাগত আয়োজন:-
শয়তান মুসলমানকে একথা বুঝাতে সক্ষম হয়েছে যে কুরআন শুধু তেলাওয়াত করার কিতাব। এটা পড়ে পড়ে বুঝা বা বুঝে সঠিক পথের সন্ধান পাওয়া সাধারণ মানুষের কাজ নয়। এটা বিশেষত:আলিম উলামা বা মুফাসিসরদের কাজ। উনারাই বঝবেন। মানুষদেরকে বুঝাবেন। তাছাড়া এটা আরবী ভাষায়। আরবী ভাষা সবার বোধগম্য নয়। বিদেশী ভাষা। কতজন এভাষা বুঝতে সক্ষম হবে বা বুঝার জন্যে কোর্স করে। মানুষ কি এতো অবসর?
কাউকে বুঝিয়েছে এই বলে যে এটা কেবলমাত্র ছহীহ তাবীজের কিতাব। এটা দিয়ে তাবিজ িদলে পরে দুষ্ট জ্বীন থেকে বাচা যাবে। মানুষের ক্ষতির হাত থেকে, যাদু, নজর বা অন্যান্য অদৃশ্য অনেক কিছু থেকেই আত্মরক্ষা করার অন্যতম মাধ্যম। কাউকে আবার একথা বুঝাতে সক্ষম হয়েছে যে এটা বড়ই পবিত্র কিতাব। যা বিনা অযুতে যেমন স্পর্শ করা যায়না, তেমনি যেনো তেন সময়ে যে কেউ পড়তে পারবেনা। এটা মহাপবিত্র।
আর অনেককে এভাবে বুঝাতে পেরেছে যে দেখ, এটা কেবল মাত্র মুখস্থ করে ডেইলি বা ইয়ারলি রামাদ্বানে রিভিশন দেওয়ার িকতাব। অন্য কেউ পড়ার বা অধ্যয়ন করার নয়। কেবল তেলাওয়াত করা বা শুনার কিতাব। হাফেজগন তেলাওয়াত করেন আর বাকীর দাঁড়িয়ে মনোযোগ সহকারে শুনবেন মাত্র।
এভাবে কুরআনকে অবোধগম্য ভাষায় তিলাওয়াত করে ছওয়াব অর্জন করা যেতে পারে বটে, তবে কেউ যাতে অধ্যয়ন করে বুঝে না পড়তে পারে এজন্যে শয়তানের সব উদ্যোগ এবং এ্ডভাইস।
আল কুরআন পৃথিবীর সর্ব্বোচ্চ পঠিত কিতাব:-
আল্লাহ প্রেরিত অথবা মানব রচিত যত বই পুস্তক রয়েছে, তা যতই বিখ্যাত অথবা গুরুত্বপূর্ণ হোকনা কেন, এতটা পঠিত হয়না কুরআন যতটা পঠিত হয়। কেননা সকল বই পুস্তক বুঝে বুঝেই মানুষ পড়ে বা অধ্যয়ন করে। কিন্তু কুরআন এমন একটি ঐশীবাণী যা অতি বরকতের কারনে মানুুষ বুঝে এবং না বুঝেও পড়ে থাকে। বছরের অন্যন্য সময় আর যা হোক কিন্তু রমাদ্বান মাসে এ কিতাব পৃথিবীময় যা পড়া হয় তা একত্রি করে হিসেব করে দেখা গেছে যে দুনিয়ায় সকল বইপত্র সমগ্র বছরে যা পড়া হয় তার চাইতেও বেশী। এটা্ই হচ্ছে আল কুরআন আল্লাহ তায়ালার কিতাব হওয়ার স্বার্থকতা। তাই বলে যেনতেন ভাবে তা পড়া যাবেনা।
আল কুরআন তাহলে কিভাবে পড়বেন?
আল কুরআন পড়্ার জন্য তার মালিক নিজেই গাইডলাইন দিয়েছেন। যাতে করে সুন্দর ভাবে সমগ্র দুনিয়ায় মুসলমানরা পড়তে পারে। এজন্যে সম্পূর্ণ আলাদা একটা পড়ার ব্যাকরণ দিয়েছেন। অন্যান্য বই ভাষা জানলেই কেবল পড়া যায় বটে কিন্তু আল কুরআন পড়তে হলে প্রথমে আরবী উচ্চারণগুলো জেনে নেওয়ার জন্যে একটি কায়দা বই বা উচ্চারণ ব্যকরণ বই পড়ে কেবল উচ্চারণ করা শিখে নিতে হয়। তারপর এটাকে বিশুদ্ধভাবে পড়ার জন্যে তাজবীদ নামের ব্যাকরণ পুনরায় শিকতে হয়। কেননা এমনিতে কেবল কুরআন তেলাওয়াত করতে পারাটা হচ্ছে ছওয়াবের কাজ। কিন্তু ছহী শুদ্ধ করে পড়াটা হচ্ছে জরুরী। ছহি ও শুদ্ধ করে না পড়তে পারলে ছওয়াব যেমন হবেনা েতমনি কোন কোন ক্ষেত্রে গুনাহ হয়ে যাওয়ার অাশংকা েথকে যায়। তাহলে আল কুরআন পড়াটা কি আসলেই কঠিন?
না আসলে আল কুরআন পড়াটাবড়ই সহজ কাজ। আল্লাহ নিজেই সুরা ক্বামারে কয়েকবার ডেকে বলেছেন যে কে আছো রেডী আমার এই মহান কিতাব পড়ার জন্যে। আমি পড়লে জ্ঞানবানদের জন্য বড়ই সহজ করে দিেয়ছি। কোন বই পড়তে সংশ্লিষ্ট ভাষা জানা যেমন জরুরী তেমনি আরবী ভাষায় জ্ঞানার্জন বা বুঝতে সাক্ষম হওয়া আদৌ জরুরী নয়। কেবল পড়তেই পারলে হয়। তবে একথাটি খুবই জরুরী যে, এ মহান কিতাবখানা যেহেতু মানুষের হেদায়েত বা সঠিক পথের দিশা দিতে এসছে তাহলে তা ভালোভাবেই গবেষনার মন মানসিকতা নিয়ে পড়ে বুঝতেদ হবে। না বুঝতে পারলে কিভাবে তা থেকে গাইড বা হিদায়াত পাওয়া সম্ভব হব? অথচ এই গাইডের জন্যে আল্লাহ তায়ালা চারবার মানুষকে কিতাবখানা পড়ার জন্যে উদ্ত্ত আহবান জানিয়েছেন। সুরাতুল ক্বামারে যা আগেই উল্লখ করেছি।
এ কিতাব পড়তে হবে হিদায়াত পাওয়ার নিয়তে:-
যে কেউ এ কিতাব পড়তে পারবেন। অমুসলিমরা পড়বে জানার জন্যে, এজন্যে আমাদের মতো তাদের পবিত্রতার একবারে উযুসহ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হওয়ার প্রয়োজন হয়না। তারা কেবল অন্যান্য বইয়ের মতো পড়তে পারে। তবে আমরা মুসলমাদের জন্য ঈমান আনার কারনেই উযু সহকারে অধ্যয়ণ করতে হয় বলে সুরা ওয়াকিয়ার ৭৯ নং আয়াতে তাকিদ েদওয়া হয়েছে। এই আয়াতের আলোকে ঊলামায়ে কেরাম বিনা উযুতে স্পর্শ করতে বা পড়তে নিষেধ করেছেন। যদিও এ বিষয়টি আপেক্ষিকভাবে অপেক্ষা রাখে। যা আমার অালোচ্য বিষয় নয়। বরং অধ্যয়ন করে হিদায়াত লাভ করাই হচ্ছে কুরআনের মূল এবং প্রতিপাদ্য বিষয়। সুরা মুহাম্মাদের ২৪ নং আয়াতে তিনি বলেছেন যে মানুষের জন্যে এই কিতাব পড়ে অধ্যয়ন করে বুঝে আমল করার জন্যে পাঠিয়েছি। নাকি না বুঝার জন্যে মানুষের মনের উপর তালা লাগিয়ে রেখেছি? মূলত এ কিতাবখানা নিজে বুঝে পড়পর জন্যে একবারেই উম্মুক্ত। যেকেউ যেকোন স্থান থেকে একটি কপি হাতে নিয়েই নির্ধিদ্বায় পড়া শুরু করে দিতে পারে। যেই তা অধ্যয়ন করে সেই িহদায়াত পেয়ে যাওয়ার আশা করা যায়।
পড়ে শিক্ষা নিতে পারা বা না পারাটা অাল্লাহর হাতে:-
দ্বীনের পথে পথের আলোকবর্তিকার সন্ধান পাওয়া সহজ নয়। যেমন কুরআন পড়াটা সহজ। কেননা কাকে এই পথের সন্ধান তিনি দিবেন, তিনিই জানেন। তবে মুসলমানদেরকে আল্লাহ তায়ালা এ কিতাব ভালভাবে পড়তে এবং তার দাওয়াত সমগ্র দুনিয়ার সামনে পেশ করতে আহবান জানিয়েছেন। সে আবেদন পৌছানো সকল মুসলমান তথা কুরআন বিশ্বাসীদের উপর ফরজ করে দিয়েছেন। সুরা মায়েদার ৬৭ নং আয়াতে নবী মুহাম্মদ স: এর মাধ্যমে সকল উম্মতকে বলছেন- হে রাসুল এই কিতাবের সকল ম্যাসেজ সবার কাছে খোলা চিঠির মতো পৌছে দাও। তাছাড়া সুরা ইসরার ২৯ নং আয়াতে আল্লাহ বলছেন হে রাসল সবাইকে উম্মুক্তভাবে এ খোলা চিঠির প্রতি দাওয়াত দিতে থাকুন। যার ইচ্ছা হয় এটা কবুল করবে আর যার ইচ্ছা প্রত্যাখ্যান করবে। তাহলে ম্যাসেজটা পৌছে দেওয়া আমাদের সবার সামষ্টিক এবং ব্যক্তিগত দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনে ব্রতী হওয়া সকল মুসলমানের উপর ফরজ।
কেননা হিদায়াত তারই হাতে:-
আল কুরআনের হিদায়াত পাওয়াটা আমদের কারো হাতে নেই। এটা এককভাবে আল্লাহর হাতে। তিনি যাকে চান তাকেই এর প্রতি গাইড করবেন। যেমন স্বয়ং নবী স: প্রচষ্টা চালিয়েও আপন চাচা আবু তালিবকে মৃত্যুর সময় হেদায়াত করতে পারলেননা। বরং আল্লাহপাক সুরা ক্বাসাসের ৫৬নং আয়াতে ইরশাদ করছেন হে নবী আপনি চাইলেই কাউকেই হিদায়াত করতে পারবেননা বরং আল্লাহ যাকে চান তাকে তিনি হিদায়াত দেন। অবশ্য আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে কিতাবের দাওয়াত পৌছে দিয়ে হিদায়াতের মালিকের কাছে অবিরত ধর্ণা দিতে থাকা।
কিতাব অমান্যকারীদের পরিনাম:-
তিনি কখন কাকে কিভাবে হিদায়াত দিবেন তিনিই তা ভালো জানেন। তবে কেহ যদি এ কিতাবকে অমান্য করে তার পরিনাম বড়ই ভয়াবহ হবে। সুরা আল ইমরান ২১ নং অায়াতে বলেছেন- নিশ্চয় যারা কিতাবকে অমান্য করে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং অসংখ্য নবীদেরকে তাদের অনুসরাীদের সহ হত্যা করেছে তাদের ভয়াবহ শাস্তির সুসংবাদ দিন। পুনরায় একই সুরার ১২ নং আয়াতে তিনি সতর্কবানী প্রদান করেছেন এই বলে যে হে নবী! এই মূর্খ অহংকারীদেরকে জানিয়ে দিন, অতি শিগগিরই তোমরা সকল ক্ষেত্রে বিজিত হবে। এবং পাকড়াও করে একত্রিত করে দাউদাউ করা প্রজ্জলিত আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে। আর এটা কতইনা নিকৃষ্ট স্থান।
আল কুরআন মান্যকারীরা মূলত: সফলকাম:
যারা আল কুরআন হিদায়াতের একমাত্র কিতাব হিসেবে ধরেছে, পড়েছে, মেনেছে তাদের জীবনটি অাসলেই সফলকাম। এ কথার স্বাক্ষী সুরা কাছাছের ৫৬-৫৯ এই পাঁচ আয়াতে আল্লাহ সুন্দর ভাবে বিবৃত করেছেন। তার হলো সফলকাম। তারা খুবই নেয়ামতপ্রাপ্ত হবে দুনিয়াতে এবং পরকালেও।
তাদের ওয়ারিছ আল্লাহই।তাদেরকে ধ্বংস করা হবেনা। কেননা তারা হরদম এর তিলাওয়াত করে পড়ে এবং শিক্ষা গ্রহণ করে। তাদের দেশের লোকেরা জালিম হলেও তারা কুরআন ধরে এর উপর মজবুত থাকে।
যারা কুরআনের ম্যাসেজ গোপন করে তাদের পরিনাম ভয়াবহ:-
সুরা বাকারার ৪২ এবং ১৫৯ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন- আল কুরআনের কোন ম্যাসেজ গোপন করা যাবেনা এবং ধামাচাপাও দেয়া যাবেনা। নচেৎ সরাসরি আল্লাহর অভিশাপ এবং অভিশপ্ত মানুষের ও অভিশাপ তাদের ওপর। আর অভিশপ্তদের পরিনাম ইবলিশের সাথে দাউদাউ করা আগুনে জ্বলতে হবে।
যাদের কাছে কুরআন আছে কিন্তু পড়েনা তাদের পরিনাম:-
যে সব মুসলমানের কাছে অথবা ঘরে কুরআন পড়েনা, এড়িয়ে চলে তাদের বেলায় নবী স: বলেছেন তাদেরকে কুরআন অভিশাপ দিয়ে জাহান্নামে পৌঁছায়ে দিবে। সুতরাং কেবল রমাদ্বানেই নয় বারমাসই কুরআন পড়তে হয়, শিক্ষা নিতে হয়, অপরের কাছে কুরআনের দাওয়াত দিতে হয়। এ দাওয়াত গোপন করলে বা প্রত্যাখান করলে অথবা এড়িয়ে চলে কুরআন কিয়ামতের দিন আল্লাহর মহান দরবারে নালিশ করবে। যেখান থেকে আমাদের রেহাই পাওয়া সম্ভব হবেনা।
সুতরাং সকল মুসলমান সাবধান:-
আসুন! প্রতিদিন যেমন ঘরের বিড়ালকে খাবার দিতে হয়, ছোট ছোট বাচ্চাদের মুখে খাবার উঠিয়ে দিতে হয়। ঘরের ফুলের টবে যেভাবে প্রতিদিন পানি দিতে হয় এভাবে ঘরের কুরআনে কপিটিকেও সম্মান করি, খুব যত্ম সহকারে কমকরে হলেও পড়ি ছওয়াবের তীব্র আশায় তিলাওয়াত করি, আমলের উদ্দেশ্যে অধ্যয়ন করি, হালাল অর্জন এবং হারাম বর্জনে কুরআনের দাওয়াত মেনে চলি, ইতিবাচক হুকুমগুলো নামাজ রোজাসহ যথাযথ পালন করি, পুরাতন এবং মডার্ন জাহিলিয়াত (বেপর্দাসহ) কে মানতে অস্বীকার করি। তাহলেই আশা করা যায় আল্লাহ আমাদেরকে পরকালের কঠিন এবং ভয়াবহ আযাব থেকে দেবেন এবং জান্নাতের সুবিশাল এবং অনন্ত নিয়ামাতে সিক্ত করবেন। আল্লাহ আমাদেরকে সেই সাধনার পথে কদম কদম পথ এগিয়ে যাবার তওফিক দিন। আমীন।
লেখক: মোহাম্মদ আবুল হোসাইন খান, ইমাম ইস্ট লন্ডন মসজিদ, লন্ডন।