স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, নানা ধরনের ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, ফুসফুসের সমস্যা, জটিল মানসিক সমস্যা ইত্যাদিতে আক্রান্ত হওয়ার হার আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। নারীদের তুলনায় পুরুষদের ক্ষেত্রে এ হারটা আরও বেশি। এর কারণ অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন। সুপুরুষ হতে প্রয়োজন শুধু সচেতনতা আর ইচ্ছাশক্তি। এখানে বিশেষজ্ঞদের দেয়া সে ধরনের ১০টি পরামর্শ তুলে ধরা হলো, যা আপনাকে সুপুরুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করবে।
স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খান: পুষ্টিকর খাবার শরীরকে সতেজ, স্বতঃস্ফূর্ত রাখার পাশাপাশি বেশ কিছু অসুখকে দূরে রাখে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এ ধরনের খাবারের মধ্যে রয়েছে টাটকা শাক-সবজি, ফলমূল ও ননীমুক্ত দুধ বা স্বল্প ননীযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার।
সঠিক ওজন বজায় রাখুন: স্থূলকায় বা মোটা শরীর মানেই ঝুঁকি। স্ট্রোক, হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি মারাত্মক ব্যাধির সঙ্গে অতিরিক্ত ওজনের সম্পর্কটা খুব দূরের নয়। তাই নিয়মিত ওজনের হিসাবটা রাখুন। শরীরের বিভিন্ন অংশের মাপ নিন ও তুলনামূলক পর্যালোচনা করুন।
সক্রিয় থাকুন: নিজেকে সক্রিয় ও কর্মচঞ্চল রাখুন। শরীরচর্চা বা ব্যায়ামকে জীবনের অন্যতম অনুসঙ্গ করে নিন। দিনের একটি সুনির্দিষ্ট সময়ে ব্যায়াম করুন। ভোর বা সকালের দিকে ব্যায়ামের অভ্যাসে সবচেয়ে বেশি সুফল পাওয়া যায়।
ধূমপান ত্যাগ করুন: স্ট্রোক, ফুসফুসের জটিল ব্যাধি ও ক্যান্সারের সঙ্গে ধূমপানের কি সম্পর্ক, তা নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। একই সঙ্গে পরোক্ষ ধূমপান থেকেও নিজেকে বাঁচিয়ে রাখুন।
নিয়মিত স্বাস্থ্য-পরীক্ষা করান: প্রথমেই একজন সুদক্ষ, অভিজ্ঞ ও ভালো চিকিৎসক খুঁজে বের করুন। তার কাছে পরামর্শ নিন। কতোদিন পরপর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাবেন সে ব্যাপারে জানুন। ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল, হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন: যদিও আমাদের দেশে অ্যালকোহল সেবন করা মানুষের সংখ্যা হাতেগোনা। কিন্তু, কেউ কেউ আছেন যারা সখ পূরণ করতে গিয়ে মদপান করেন। সাবধান। এ ধরনের ভুল করবেন না। শারীরিক নানা জটিল সমস্যা তো বটেই, মানসিক সমস্যারও জন্ম দেয় অ্যালকোহল সেবনের নেশা। নানা ধরনের ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ, লিভারের জটিল সমস্যা সবকিছুর জন্য দায়ী অ্যালকোহল।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন: পরিবার, কাজ, বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে সময় কাটান। তবে একটা ক্ষেত্র যাতে আরেকটায় প্রভাব না ফেলে সেদিকে খেয়াল রাখুন। অফিসের কাজ অফিসেই শেষ করার অভ্যাস করুন। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদ্ধতি বা কৌশল অবলম্বন করুন।
পর্যাপ্ত ঘুমান: শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য দুটোই প্রভাবিত হয় নিদ্রাহীনত বা অল্প ঘুমের কারণে। ৭-৮ ঘন্টা ঘুম না হলে, চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ওষুধ খেয়ে ঘুমের অভ্যাস করবেন না।
ঝুঁকি সম্পর্কে সজাগ থাকুন: আপনার লাইফস্টাইল বা জীবনযাত্রার পদ্ধতির ওপরও শারীরিক-মানসিক সুস্বাস্থ্য নির্ভরশীল। বংশগত শারীরিক বা মানসিক সমস্যার ইতিহাস জেনে নিন। এ ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ও নিজে সাবধান থাকুন।
নিরাপদ থাকুন: নিজেকে সবসময় নিরাপদ রাখার চেষ্টা করুন। মোটরবাইক চালালে হেলমেট পরিধান করুন। গাড়িতে থাকলে সিটবেল্ট বেঁধে নিন। রাস্তায় সাবধানে চলাচল করুন। প্রখর রোদ থেকে ত্বককে বাঁচাতে সানস্ক্রীন লোশন বা ক্রীম ব্যবহার করুন। হাত-মুখ ভালোভাবে ধুয়ে খেতে বসুন। দাঁতের যত্ন নিন।