প্রায় ১২৫ বছর পরে নাইজেরিয়ায় ফিরলো ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক বাহিনীর চুরি করা একটি ব্রোঞ্জ ভাস্কর্য। খবর আল জাজিরার।
পশ্চিম আফ্রিকান রাজার মাথার ভাস্কর্যটি সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ড জাদুঘরে (আরআইএসডি) সংরক্ষিত ছিল। এটিসহ সাংস্কৃতিকভাবে মূল্যবান মোট ৩১টি প্রত্নবস্তু সম্প্রতি নাইজেরীয় সরকারকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) ওয়াশিংটন ডিসির স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনে এক অনুষ্ঠানে নাইজেরিয়ান ন্যাশনাল কালেকশন কর্তৃপক্ষের হাত তুলে দেওয়া হয়েছে ‘হেড অব এ কিং’ বা ওবা নামে ব্রোঞ্জ ভাস্কর্যটি।
১৮৯৭ সালে তৎকালীন বেনিন সাম্রাজ্যে (বর্তমান নাইজেরিয়া) ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক বাহিনীর লুটপাটের সময় চুরি হয়েছিল ব্রোঞ্জের তৈরি বহু ভাস্কর্য। এগুলোই পরবর্তীতে বেনিন ব্রোঞ্জ নামে পরিচিতি পায়।
আরআইএসডি জাদুঘরের অন্তর্বর্তী পরিচালক সারাহ গঞ্জ ব্লাইথ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ওভোনরানউমেনের রয়্যাল প্যালেস থেকে চুরি হয়েছিল ‘হেড অব অ্যান ওবা’। ভাস্কর্যটি মূলত নাইজেরীয় জনগণের। তাই তাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য নাইজেরিয়ার জাতীয় জাদুঘর ও স্মৃতিস্তম্ভ কমিশনের সঙ্গে কাজ করছে আরআইএসডি।
Today, we address a historic injustice by returning the Benin Bronzes, magnificent examples of Benin’s culture and history. Through this repatriation, we acknowledge a legacy of cultural theft and do our part to return African culture to Africans.
Shown here: bronze plaque. pic.twitter.com/E4vWQG8SFi
— Lonnie G. Bunch III (@SmithsonianSec) October 11, 2022
আরআইএসডি জাদুঘর বলেছে, ওবা ভাস্কর্যটি নিশ্চিতভাবে লুট হওয়া বস্তুগুলোর মধ্যে একটি। তবে ফ্রান্স বা যুক্তরাজ্যের সংগ্রহে থাকা বেনিন ব্রোঞ্জ ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে এটি কোনটির অংশ, তা নির্ণয় করা যায়নি।
ব্রোঞ্জের তৈরি মাথাটি পশ্চিম আফ্রিকার এডো জনগণের এক ওবা বা রাজার প্রতিনিধিত্ব করে। পূর্বসূরীকে সম্মান জানানোর জন্য এক নতুন রাজা ভাস্কর্যগুলো বানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং সেগুলো রাজপ্রাসাদের বেদিতে স্থাপন করা হয়েছিল।
ঔপনিবেশিক যুদ্ধের সময় চুরি হওয়া প্রত্নবস্তু ফেরত দেওয়ার জন্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশ্বব্যাপী আন্দোলনের অংশ হিসেবে ভাস্কর্যটি নাইজেরিয়ায় ফিরিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ধারণা করা হয়, ওবা বা ‘রাজার মাথা’র ভাস্কর্যটি ১৭০০-এর দশকে তৈরি। ১৯৩৯ সালে এটি আরআইএসডি জাদুঘরের হাতে তুলে দেন লুসি ট্রুম্যান অলড্রিচ নামে এক প্রত্নসংগ্রাহক। ১৯৩৫ সালে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত এক নিলামে ভাস্কর্যটি কিনেছিলেন তিনি। ওবার গায়ে লাগানো একটি ফরাসি স্ট্যাম্প থেকে বোঝা যায়, এটি কোনো এক সময় ফ্রান্সের কারও সংগ্রহে ছিল।
Leave a Reply