শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ১২:১৫

যুক্তরাজ্যে ক্লিনার সেজে লাখ লাখ পাউন্ডের অলঙ্কার চুরি

যুক্তরাজ্যে ক্লিনার সেজে লাখ লাখ পাউন্ডের অলঙ্কার চুরি

যুক্তরাজ্যে একটি চক্রের মূল উদ্দেশ্য, চুরি করা সম্পদ রোমানিয়ায় পাঠিয়ে সেখানে বিশাল অট্টালিকা নির্মাণ করা। চক্রের অন্যতম সদস্য লুমিনিতা জামফির (২৪)। তিনি সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে দ্বিতীয় বৃহৎ ব্যক্তিগত এক বাসভবনে ঢুকে প্রায় ৫.৫ লাখ পাউন্ড মূল্যের গয়না হাতিয়ে নেন।

পরিচ্ছন্নতার কর্মী সেজে রাজধানী শহরের এসব অভিজাত বাড়িগুলোতে প্রবেশ করে লাখ লাখ পাউন্ড মূল্যের অলঙ্কার চুরি করছে একটি সংঘবদ্ধ অপরাধচক্র। তারা রোমানিয়া থেকে যুক্তরাজ্যে গিয়ে এসব করছে।

জানা যায়, ওই বাড়ির কর্মচারীদের বাসস্থান থেকে ‘ট্রায়াল শিফট’-এর অজুহাতে মূল ভবনে প্রবেশ করেন। কিছুক্ষণ পরই ধরা পড়ে যে, তিনি বাড়ির এক ধনী আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী পরিবারের গয়না, ঘড়ি ও নগদ অর্থ চুরি করেছেন।

এটাই প্রথম নয়। জামফির পূর্বেও আরও দুটি বাড়িতে একইভাবে চুরি করেছেন। সেটা ছিল এক ধনকুবের এবং এক প্রপার্টি ম্যানেজারের বাড়ি। সেখান থেকে ঘড়ি, কাফলিংক ও নগদ মিলিয়ে ৫০ হাজার পাউন্ডের মালামাল চুরি করেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইল।

এক বাড়িতে ফেলে যাওয়া টিস্যু থেকে ডিএনএ এবং বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজে জামফির ধরা পড়েন। যদিও চুরি করা কোনো সম্পদ উদ্ধার হয়নি, আদালতে জামফির অপরাধ স্বীকার করার পর বিচারক তাকে পরামর্শ দিয়েছেন, চুরি করা মালামালের খোঁজ দিতে।

জামফিরের বিরুদ্ধে ১৭ বছর বয়স থেকেই চুরির অভিযোগ আছে। তিনি বিভিন্ন হোটেলে গেস্টদের ঘরে ঢুকে মূল্যবান সামগ্রী চুরি করতেন। একাধিক রোমানীয় নারী- যেমন সাব্রিনা রোভা, বিয়ানকা ডিডিরিয়া ও মারিনেলা মানোলেসু, একইভাবে হোটেল ও অভিজাত বাড়িতে চুরি করেছেন এবং তাদের অনেকেই সাজা ভোগ করছেন বা পালিয়ে রোমানিয়ায় চলে গেছেন।

বেশিরভাগই গর্ভবতী, অথবা ছোট শিশুসন্তানের মা। অনেক সময় এসব নারী আসলেই ক্লিনার হিসেবে কাজ করতেন অথবা ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করতেন। কিছু ক্ষেত্রে, তারা নিজেরাই ক্লিনিং কোম্পানি রেজিস্ট্রার করতেন, যাতে বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ে। স্থানীয় সূত্রমতে, জামফির কোনো বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন না। পূর্ব লন্ডনের একটি সাধারণ টেরেস হাউসে তিনি কয়েকজন নারী ও শিশুদের সঙ্গে থাকতেন।

এক প্রতিবেশী বলেন, তাকে কেউ ব্যবহার করেছে। সে জানতো না সে কত দামের জিনিস চুরি করছে। সব কিছু দেশের বাড়িতে পাঠানো হয়। জামফির বর্তমানে হেফাজতে আছেন এবং জুন মাসে তার সাজা ঘোষণা হবে। আদালতে তিনি সদ্যোজাত সন্তানকে কোলে নিয়ে হাজির হন। তার স্বামী বা সহযোগীর কোনো খোঁজ মেলেনি।

অন্য এক প্রতিবেশী জানান, জামফির যে বাড়িতে থাকতেন, তার পাশেই আরেকটি রোমানীয় পরিবার বাস করে, যারা ভিক্ষার কাজে নিয়োজিত। এই চক্রের কর্মকাণ্ড বৃটেনের জন্য একটি বড় সতর্কবার্তা।

বিদেশ থেকে এসে যুক্তরাজ্যে বসবাস ও কাজের সুযোগ পাওয়ার পর অনেকেই যেখানে পরিশ্রম করে ভালো জীবন গড়ার চেষ্টা করেন, সেখানে কিছু সংঘবদ্ধ অপরাধচক্র তাদের দেশীয় কাঠামোকে কাজে লাগিয়ে দেশটির আইনের দুর্বলতা ও মানবিকতা অপব্যবহার করছে।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025