শীর্ষবিন্দু নিউজ: চিংড়ি রপ্তানির দ্বার উন্মুক্ত করতে রাশিয়া সরকারকে চিঠি দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার এ নিকোলায়েভের মাধ্যমে চিঠি প্রেরণ করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক এ চিঠি প্রদান করেন। গত নভেম্বর থেকে রাশিয়াতে চিংড়ি রপ্তানি বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশের।
চিঠির বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক জানান, আমি তাদের জানিয়েছি, আপনারা বাংলাদেশের বদলে থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম থেকে চিংড়ি নিচ্ছেন। কিন্তু সেগুলো হাইব্রিড। বাংলাদেশে যে চিংড়ি উৎপাদন হয় তা পুরোটাই প্রাকৃতিক। এতে কোনো ভেজাল বা কৃত্রিমতা নেই। তাই বাংলাদেশ থেকে চিংড়ি আমদানি করলে রাশিয়া লাভবান হবে। রাশিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও বাংলাদেশের বিভিন্ন চিংড়ি রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের আহ্বান জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. এসএম সাইফুল হককেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী প্রতি ২০ গ্রাম মাছে ১০ লাখ সিএফইউ (কলোনি ফরমিং ইউনিট) গ্রহণযোগ্য। বাংলাদেশ এ মাত্রা অনুযায়ী আমেরিকা ও ইওরোপীয় ইউনিয়নে চিংড়ি রপ্তানি করলেও রাশিয়া শীত প্রধান দেশের মান অনুযায়ী ১ লাখ সিএফইউ মান নির্ধারণ করেছে। বাংলাদেশের মতো উষ্ণ অঞ্চলের দেশে এ মাত্রা বজায় রাখা কষ্টকর। কারণ গরম আবহাওয়ায় ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
মৎস্যসম্পদমন্ত্রী জানান, বিদেশে রপ্তানি মাছের পরিমাণ ৮০ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৫০ শতাংশই চিংড়ি। এ যাবৎ বাংলাদেশ চিংড়ি রপ্তানি করে ৪ হাজার কোটিরও বেশি টাকা আয় করেছে। ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রাশিয়া। ২০১৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে চিংড়ি আমদানি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয় রাষ্ট্রটি।
মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ আরিফ আজাদ বলেন, মোট ৪টি প্রতিষ্ঠানের উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। এর মধ্যে গত ৬ ফেব্রুয়ারি বাগেরহাট সি ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে রাশিয়া। বাকি ৩ টির ব্যাপারে মান পরীক্ষা করে রপ্তানির দরজা খুলে দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার এ নিকোলায়েভের সঙ্গে গত মঙ্গলবার এ বিষয়ে বৈঠক হলে তিনি একটি পত্র দেয়ার জন্যে বলেন। তার প্রেক্ষিতে মন্ত্রী আজ এ পত্র দিয়েছেন।
আরিফ আজাদ জানান, বাংলাদেশ উদ্যোক্তা পর্যায়ে ২০০৯ সালের পূর্ব থেকে রাশিয়াতে হিমায়িত মৎস্য ও মৎস্যজাত দ্রব্য রপ্তানি করে আসছে। তবে সঠিক মান নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তর ও রাশিয়ার ফেডারেল প্রণিসম্পদ কর্তৃপক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। যার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের ৪টি প্রতিষ্ঠান রাশিয়াতে চিংড়িসহ অন্যান্য হিমায়িত খাদ্য রপ্তানি শুরু করে। কিন্তু মান নির্ধারণের মাত্রা বাড়িয়ে কড়াকড়ি আরোপের কারণে তা কমতে থাকে।