শীর্ষবিন্দু নিউজ: দেশের পোশাক খাত নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প বিশ্ববাজারে সুনামের সাথে স্থান করে নিয়েছে। অনেকেই বাংলাদেশের এ সাফল্য ভালো চোখে দেখছে না। দেশে বিদেশে তৈরি পোষাক শিল্প নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। তাই এ বিষয়ে মালিক-শ্রমিক সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। মঙ্গলবার দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সোস্যাল কমপ্লায়েন্স ফোরাম এর ২৪তম সভায় সভাপতির বক্তব্য দিতে গিয়ে এ কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প এখন অনেক বড়। এ খাতে ৪৪ লাখেরও বেশি শ্রমিক কাজ করছেন। যার মধ্যে ৩৫ লক্ষাধিক শ্রমিক নারী। একদিনে এ শিল্প গড়ে উঠেনি। এ শিল্প টিকিয়ে রাখতে এবং এগিয়ে নিতে সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সরকার এ শিল্পের উন্নয়নের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, শ্রমিকদের প্রতি যত্মবান হতে হবে, তাদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তৈরি পোশাক শিল্পকে শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে সরকার বেশকিছু কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক স্থগিতকৃত জিএসপি (জেনারেলাইজড সিস্টেম অফ প্রিফারেন্স) সুবিধা ফেরত পাওয়ার জন্য আরোপ করা ১৬টি শর্তের মধ্যে বেশির ভাগই পূরণ করেছে।
চলতি মার্চ মাসের মধ্যে কারখানা পরিদর্শনের জন্য ২শ’ পরিদর্শক নিয়োগ দেয়া হবে। শ্রমিকদের ডাটাবেজ তৈরি সম্পন্ন করা হবে। পাশাপাশি ইপিজেড এর শ্রমিকদের জন্য শ্রম আইন সময়োপযোগী করে তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া কারখানায় অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধের জন্য শুল্কমুক্তভাবে ফায়ার সেফটি দোর আমদানির সুযোগ প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিল্ডিং কোড অনুযায়ী কারখানা ভবন নির্মাণের উদ্দেশ্যে সরকার ইতোমধ্যে মন্সীগঞ্জ জেলার বাউশিয়ায় গার্মেন্টস পল্লী স্থাপনের জন্য ৫শ’ একর জমি বরাদ্দ করেছে। এটি বাস্তবায়নের জন্য প্রায় ৮শ’ কোটি টাকা প্রয়োজন। চীন সরকার এ খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও গত ৮ মাসে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ শতাংশ, সেখানে রপ্তানি হয়েছে ১৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ। বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। বিশ্বের যে কোন দেশের তুলনায় বাংলাদেশ কম দামে পোশাক তৈরি করে থাকে। সে কারণে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের চাহিদা বেড়েই চলছে। ইতোমধ্যে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো বাংলাদেশকে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার দিতে শুরু করেছে।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি শিরিন আক্তার এমপি, বাণিজ্য সচিব মাহবুব আহমেদ, শ্রম সচিব মিকাইল শিপার। এ ছাড়া বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, আইএলও, রাজউক, শিল্প মন্ত্রণালয়, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর প্রতিনিধিরাও সভায় উপস্থিত ছিলেন।