সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ১১:৪৯

গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে মুখ খুললেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কূটনীতিক মনিরুল

গৃহকর্মীর বিরুদ্ধে মুখ খুললেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কূটনীতিক মনিরুল

শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: গৃহকর্মীকে বিনা পারিশ্রমিকে দাসত্বের মতো পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মনিরুল ইসলাম। উল্টো গৃহকর্মী মাসুদ পারভেজ রানা তাকে ফাঁসানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ তৈরি করতেই তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

মনিরুল ও তার স্ত্রী ফাহিমা তাহসিনা প্রভার বিরুদ্ধে বিনা পারিশ্রমিকে দাসত্বের মতো পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য করার অভিযোগে ম্যানহাটন ফেডারেল কোর্টে শুক্রবার রানা একটি মামলা করেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক গণমাধ্যমে খবর বের হয়।

রানার অভিযোগ, সুন্দর কর্মপরিবেশে মাসিক তিন হাজার ডলার পারিশ্রমিক দেয়ার বিনিময়ে ওই কূটনীতিক দম্পতির ম্যানহাটনের বাসায় গৃহপরিচারক হিসেবে কাজের জন্য চুক্তিবদ্ধ হলেও তারা তাকে বিনা পারিশ্রমিকে দিনে ১৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করাতে বাধ্য করাসহ নানাভাবে তাকে নির্যাতন করত। নিউ ইয়র্ক কনস্যুলেটে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মনিরুল ইতোমধ্যে মরক্কোয় রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তার দাবি, এথেকেই ঘটনার সূত্রপাত।

মনিরুল শনিবার গণমাধ্যমকে বলেন, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে তাকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হবে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এই বিষয়ে গৃহকর্মী রানার সঙ্গে তার কথা হয়। কূটনীতিকের বক্তব্য অনুযাযী, তিনি রানাকে বলেছিলেন যে ইচ্ছা করলে সে তার সঙ্গে মরক্কো যেতে পারেন। তা না হলে তাকে বাংলাদেশে ফিরে যেতে হবে। একথা শুনেই রানা বলে, সে আমেরিকা থেকে কোথাও যাবে না। সে আমেরিকায় স্থায়ীভাবে থাকার জন্য আমার সঙ্গে এসেছে। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে রানাকে ঢাকা থেকে সঙ্গে করে নিউ ইয়র্কে আনেন। তবে তার ভিসার আবেদনে তিনি কোনো স্বাক্ষর করেননি বলে মনিরুল জানান। তাই প্রতি মাসে তাকে ৩ হাজার ডলার ভাতা প্রদানের যে অভিযোগ করা হয়েছে সেটি সত্য নয়।

রানার অভিযোগ, তাকে সকাল সাড়ে ৬টায় ওঠে থালা-বাসন মাজা থেকে শুরু করে সব রান্না, কাপড় ইস্ত্রি, হাতে কাপড় ধোয়া, বাসা পরিষ্কার করা এবং ওই দম্পতির শিশু ছেলের দেখাশোনাসহ ঘরের আরো কাজ করতে হতো। তাকে রাত ১১টা পর্যন্ত এবং কখনো ওই দম্পতি গভীর রাতে নাস্তা করতে চাইলে রাত ৩টা পর্যন্তও কাজ করতে হত। আর খেতে দেয়া হত উচ্ছিষ্ট খাবার।

এই কূটনীতিকের দাবি, রানার বাবা ঢাকার কচুক্ষেতের ব্যবসায়ী নাসিরুদ্দিন ছেলের বেতন থেকে সমন্বয়ের শর্তে তার কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা নেন। এ ব্যাপারে লিখিত দলিল রয়েছে। সুতরাং রানাকে কাজ করিয়ে কোনো পারিশ্রমিকই দিইনি, এটি একেবারেই সত্য নয়। রানার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় এবং কনসাল জেনারেলের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়, দুটি জেলা পাশাপাশি।

মনিরুল জানান, সম্প্রতি তিনিসহ পরিবারের সদস্যদের অনুপস্থিতিতে বাসা থেকে চলে যান রানা। কম্যুনিটির একটি অনুষ্ঠান থেকে রাত ১১টায় সপরিবারে বাসায় ফিরে দেখি রানা নেই। সম্ভাব্য সব স্থানে যোগাযোগ করেছি, কোনো হদিস পাইনি। তখন আমার ধারণা হয় যে, রানা হয়তো কোথাও আশ্রয় পেয়েছে। সে (রানা) যদি আইন লঙ্ঘন করে নিজ দায়িত্বে যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে চায়, তাহলে আমি থামাবো কীভাবে- নিজেকে সান্ত্বনা দিই, বলেন তিনি। রানার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসকে টেলিফোনে জানালেও পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ করেননি মনিরুল।

তার ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে রানার মামলা করার খবরও তিনি গণমাধ্যমে প্রথম দেখেন বলে জানান তিনি। অন্যদিকে রানার সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। রানার পক্ষে মামলাটিতে লড়ছেন ডানা সুসম্যান, নারী গৃহকর্মীর পারিশ্রমিক বিষয়ে মিথ্যা তথ্যপ্রদানের অভিযোগে অভিযুক্ত ভারতীয় কূটনীতিক দেবযানী খোবরাগাড়ের বিরুদ্ধে ভারতীয় নাগরিক সঙ্গীতা রিচার্ডের মামলারও অ্যাটর্নি ছিলেন তিনি। শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় এই বিষয়ে ডানা সুসম্যানের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।




Comments are closed.



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025