স্বদেশ জুড়ে ডেস্ক: চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এক গোলটেবিল বৈঠকের। স্থিতিশীল অর্থনীতির জন্য সংঘাতের অবসান ঘটাতে দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রতি আহবান জানিয়েছে সিপিডি। তবে তাদের এই প্রস্তাব শুনেও উপস্থিত রাজনীতিকদের কাছে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি। শনিবার রাজধানীর হোটেল লেইক শোরে ‘বাংলাদেশ ২০১৩ : অ্যাসেসিং ইকনোমিক ইসপ্লিকেশনস অফ দি প্রেজেন্ট পলিটিক্যাল শকস’ শীর্ষক সংলাপে রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের উপস্থিতিতে এই প্রস্তাব উপস্থাপন করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এই সংলাপে তিনটি প্রস্তাব তুলে ধরে সিপিডি।
সিপিডির প্রস্তাবগুলো হচ্ছে- ১. জীবন ও সম্পদের ক্ষতি করছে ধংসাত্মক ও নাশকতামূলক এমন কর্মকাণ্ড অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। ২. সংলাপের পরিবেশ তৈরি করতে গ্রেপ্তার হওয়া বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি দিতে হবে। ৩. শীর্ষ রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। সিপিডির উপস্থাপনার বেশিরভাগ অংশজুড়েই ছিল হরতালের কারণে অর্থনৈতিক বাধাগ্রস্ত হওয়ার তথ্য ও বিশ্লেষণ।
সিপিপির সাবেক নির্বাহী পরিচালক দেবপ্রিয় বলেন, রপ্তানি প্রবৃদ্ধি, বিনিয়োগ ও বৈদেশিক সাহায্য কমছে। মুদ্রানীতিতে অর্থ সরবরাহ বাড়ানোর প্রয়াস থাকলে ঋণ চাহিদা কমে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোতে উদ্বৃত্ত তারল্যের পরিমাণ বাড়ছে। সবমিলিয়ে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) লক্ষ্যমাত্রার (৭.২ শতাংশ) দশমিক ৯ শতাংশ কমে যাওয়ার ‘আশঙ্কা’ প্রকাশ করে তিনটি প্রস্তাব দিয়েছে সিপিডি। হরতাল ও সহিংসতার কারণে বাংলাদেশের ‘নেতিবাচক’ চিত্র বিশ্ব সমাজের নজরে আসছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, তিনি সংলাপের সম্ভাবনা দেখছেন না। কারণ বিএনপি বলবে, সংলাপ হতে হলে তত্ত্বাবধায়ক আগে মানতে হবে।যা কখনোই সম্ভব নয়। দেশে ধ্বংসাত্মক কার্কলাপ বন্ধ হবে, যদি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ হয়। কিন্তু এটা মোটেই নয়। আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য বিএনপিকে সংসদে ফিরে শর্তহীন আলোচনায় আসার আহবান জানান।
বিএনপির সহ সভাপতি ওসমান ফারুক বলেন, দেশের পরিস্থিতি একটা অসহনীয় অবস্থায় চলে গেছে। এ থেকে উত্তরণের জন্য শুধু সরকারই নয়, বিরোধী দলেরও দায়িত্ব আছে। তবে হাঁটি হাঁটি পা পা করে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। সংলাপে বসতে হবে, তবে তা মিনিংফুল হতে হবে। বিএনপি নেতা ব্যবসায়ীদেরকে নিরপেক্ষ ও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার আহবান জানিয়ে বলেন, হরতাল তখনি বন্ধ হবে যখন রাজনৈতিক সমাধানে আসতে পারব আমরা। এক্ষেত্রে বিএনপির অবস্থান পরিষ্কার।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, বিরোধী দলের আস্থা নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন দেয়া সরকারের একটা দায়িত্ব। রাজনীতিকদের উদ্দেশে এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, “আপনারাই তো ক্ষমতায় আসবেন। তাহলে আজ দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে দিয়ে আপনার কী পেতে চান? উৎপাদন খাতের পাশাপাশি সেবা খাতও আজ ধ্বংসের মুখোমুখি। আপনারা রেড অ্যালার্ট জোন করে কি আমাদের মারতে চান আমাদের পণ্য আমদানী রপ্তানী ধ্বংস করতে চান?
Leave a Reply