গ্যালারী থেকে ডেস্ক: হঠাৎ করেই সিডনির আকাশ ভেঙে ঝুম বৃষ্টি। দক্ষিণ আফ্রিকা দলের অনেকের মনেই তখন উঁকি দিচ্ছে ১৯৯২ বিশ্বকাপের দুঃসহ স্মৃতি। তবে কী…! নাহ্, নিজেদের চিরকালীন দুর্ভাগ্য নিয়ে এমন আকাশ-পাতাল ভাবার তেমন কিছু তখন ছিল না। ততক্ষণে শ্রীলঙ্কার স্কোরকার্ড যে রীতিমতো কঙ্কাল-সার! ১২৭ রান স্কোর বোর্ডে তুলতেই ৯ উইকেট হারিয়ে ম্যাচটা তখন শ্রীলঙ্কা মোটামুটি তুলেই দিয়েছে প্রোটিয়াদের হাতে!
বৃষ্টি-সংক্রান্ত আশঙ্কাটাও ছিল অমূলকই। যদি কোনো কারণে আজ খেলা মাঠে গড়াতে না পারতো, তবে কাল রিজার্ভ ডে’তে খেলাটা শুরু হতো, সেই ১২৭ / ৯ থেকেই। এমন অবস্থায় দক্ষিণ আফ্রিকার হারের কোনো শঙ্কা ছিল কী! শঙ্কাটা আসলে দূরে ঠেলে দিয়েছে শ্রীলঙ্কার ‘চোকিং’ই। হ্যাঁ, শ্রীলঙ্কাকেই ‘চোকার’ উপাধিটা দিতে হচ্ছে। দারণ দল, দারুণ সব তারকা তবুও এই দলটি কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল, ফাইনাল-এমন সব নক আউট গেমেই কেন যেন ব্যর্থ! অনেক বছর ধরেই ব্যর্থ!
এবারের বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বে দারুণ ব্যাটিং পারফরম্যান্সে নিজেদের নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছিল লঙ্কানরা। কুমার সাঙ্গাকারার দুর্দান্ত ফর্ম, আর বোলারদের জ্বলে ওঠার প্রবণতা আজ কোয়ার্টার ফাইনালে স্বপ্ন দেখিয়েছিল শ্রীলঙ্কা-সমর্থকদের। কিন্তু নিজেরা ১৩৩ রানে অলআউট হয়ে সেই স্বপ্নকে ভূলুণ্ঠিত করেছে তারা নিজেরাই। ১৩৩ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার পর ম্যাচের আর বিশেষ কিছু বাকি থাকে না। আজকের ম্যাচেও এর ব্যতিক্রম কিছু হয়নি। হাশিম আমলার উইকেটটি হারিয়েই জয়ে বন্দরে পৌঁছে গিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ম্যাচের শুরু থেকেই যে শরীরী ভাষায় লঙ্কানদের চেপে ধরেছিল প্রোটিয়ারা। তার সার্থক পরিণতিটাই কেবল দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা। ১৮ ওভারের মধ্যেই খেলাটা শেষ করে দিয়ে নিজেদের ‘চোকার’ অপবাদটা দারুণভাবে দূর করেছে তারা। ১৯২ বল বাকি থাকতে এই জয় বিশ্বকাপের নক আউট পর্বেরই নতুন রেকর্ডই। কুইন্টন ডি কক পুরো বিশ্বকাপে ফর্মে ছিলেন না। আজ তিনি খেললেন ৭৪ রানের ইনিংস। ব্যাট হাতে জয়ের নায়ক তিনিই। বল হাতে জেপি ডুমিনির হ্যাটট্রিক, আর ইমরান তাহিরের ৪ উইকেট ম্যান অব দ্য ম্যাচ দাবিদারের দলটাই কেবল ভারি করেছে। ৯ উইকেটের এই বিশাল জয় বিশ্বকাপ ইতিহাস নতুন করে লেখার ইঙ্গিত কিনা, সেটা কে জানে!