আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: আগামী ৩ মে থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত অবৈধ অভিবাসীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে ওমান। এই সময়ের মধ্যে কোনো জেল, জরিমানা ছাড়াই ওমান থেকে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারবেন তারা। এছাড়াও ফেরত আসা শ্রমিকেরা কমপক্ষে তিনবছর পর আবারও দেশটিতে প্রবেশের সুযোগ পাবেন বলে জানা গেছে।
ওমানের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ সিকান্দার আলী জানান, কিছুদিন ধরেই সাধারণ ক্ষমার বিষয়টি শোনা যাচ্ছিল। অবশেষে দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয় সাধারণ ক্ষমার ঘোষণাটি করেছে। ওমানে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকেরা এ সুযোগ নিতে পারবেন।
প্রায় পাঁচবছর পর সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা সুযোগ দিচ্ছে ওমান। এর আগে ২০০৯-১০ সালে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিল দেশটি। তখন প্রায় ৬০ হাজার অবৈধ অভিবাসী এ সুযোগ গ্রহণ করেছিলেন। এবার বাংলাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের কমপক্ষে পঞ্চাশ হাজার নাগরিক ওমানে এ সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে ওমানে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাস দেশে ফিরতে আগ্রহী বাংলাদেশিদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া হালনাগাদ করা শুরু করেছে। এ ব্যাপারে অনেক শ্রমিক নিজেই দূতাবাসে যোগাযোগ করছেন বলে জানা যায়।
ওমানে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর একেএম রবিউল ইসলাম বলেন, সাধারণ ক্ষমার অর্থ অবৈধ শ্রমিকেরা জেল এবং জরিমানা ছাড়াই দেশে ফিরতে পারবেন। কিন্তু বৈধ অভিবাসী হতে পারবেন না। তবে তিনবছর পর বৈধভাবে আবার ওমানে ফেরার সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, ওমানে অবৈধভাবে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ হাজার বাংলাদেশী শ্রমিক এ সুযোগ গ্রহণ করবেন বলে আশা করি। বাংলাদেশ দূতাবাসের এই কর্মকর্তা বলেন, দূতাবাস থেকে ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করে ওমানের অভিবাসন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করলেই দেশ ত্যাগের অনুমতি পাবেন অবৈধ অভিবাসীরা।
সাধারণত উপসাগরীয় দেশগুলো অবৈধ বিদেশি শ্রমিকদের সাধারণ ক্ষমার মাধ্যমে কোনো জরিমানা ছাড়াই দেশ ত্যাগের অনুমতি দেয়। কিছুদিন আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতও দেশটিতে থাকা অবৈধ শ্রমিকদের সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা দেয়।
ওমানে বিদেশি শ্রমিকদের সংখ্যার অনুপাতে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, শ্রমিক পাঠানোর দিক থেকে ওমান বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক শ্রমবাজার। চলতি মাসে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের ওমান সফরে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে নিয়মিত পরামর্শ বৈঠক (এফওসি) অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এ সময় বাংলাদেশ থেকে আরও শ্রমিক ওমানে প্রেরণের ব্যাপারে আলোচনা করা হয়।