শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ১১:০৩

শ্রমিকদের বিক্ষোভের মধ্যে দিয়ে শেষ হলো ওয়ালমার্টের এজিএম

শ্রমিকদের বিক্ষোভের মধ্যে দিয়ে শেষ হলো ওয়ালমার্টের এজিএম

 

 

 

 

 

 

 

 

দুনিয়া জুড়ে ডেস্ক: শ্রম অধিকার কর্মীদের বিক্ষোভ আর শেয়ারহোল্ডারদের কড়া সমালোচনা ও প্রশ্নবাণের মধ্য দিয়ে শেষ হলো তৈরি পোশাকের বিশ্বখ্যাত খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্টের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)। এজিএম চলাকালে বাইরে রানা প্লাজা ধসে নিহতদের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রম অধিকার কর্মীরা। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের আরাকানসাসে ওয়ালটন অঞ্চলে বাংলাদেশী পোশাকের অন্যতম শীর্ষ এ ক্রেতা প্রতিষ্ঠানটির এজিএম অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে।

এজিএমেও বাংলাদেশের পোশাক কারখানার মান উন্নয়নে অবহেলার অভিযোগে শেয়ারহোল্ডারদের অসংখ্য প্রশ্ন ও তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন কোম্পানির নীতিনির্ধারক ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। অবশেষে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের মান উন্নয়নে জোরালো ভূমিকা রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েই শেষ করতে হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির এজিএম।

জানা যায়, ওয়ালমার্টের ইতিহাসে কখনও এমন নাজুক অবস্থায় পড়তে হয়নি প্রতিষ্ঠানটিকে। বিশ্বের বৃহত্তম খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্টের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয় উত্সব-আনন্দের মধ্য দিয়ে। কিন্তু এবার ছিল ভিন্ন চিত্র। এই প্রথম ভেতরে-বাইরে ব্যাপক বিক্ষোভকে সঙ্গী করে চালিয়ে নিতে হয় এজিএম। এজিএমে বাংলাদেশের পোশাক কারখানার মান উন্নয়নে অবহেলার অভিযোগে শেয়ারহোল্ডারদের প্রশ্নবাণ ও তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন কোম্পানির নীতিনির্ধারক ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। একই ইস্যুতে এজিএমের বাইরেও বিক্ষোভ করেন শ্রম অধিকার কর্মীরা। অন্যদিকে বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভ করেন কোম্পানির কয়েকশ’ কর্মী।

শুক্রবারের এজিএমে এ নিয়েও জবাবদিহি করতে হয় কোম্পানি কর্তৃপক্ষকে। এজিএমে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের দুজন পোশাক-কর্মী। এদের একজন সুমি আবেদিন, যিনি তাজরীন ফ্যাশনের অগ্নিকাণ্ডে সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। অন্যজন কল্পনা আক্তার, যিনি একসময় শিশু শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে শ্রম অধিকার সংগঠনের নেত্রী। কল্পনা আক্তার অভিযোগ করেন, প্রতিটি দুর্ঘটনার পর ওয়ালমার্টের কর্মকর্তারা অঙ্গীকার করেন, পোশাক কারখানার মান উন্নয়ন ও নিরাপত্তা বাড়াতে কাজ করবেন তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা কিছু করেন না। তিনি কোম্পানি কর্তৃপক্ষকে ভবন ও অগ্নি নিরাপত্তা চুক্তিতে সই করার আহ্বান জানান। তিনি বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উন্নয়নে ওয়ালমার্টকে আরও অর্থ ব্যয় করার আহ্বান করেন। তিনি বলেন, কোম্পানিটির বার্ষিক মুনাফার এক শতাংশের পাঁচ ভাগ ব্যয় করলেই বাংলাদেশের সব পোশাক কারখানাকে নিরাপদ করা সম্ভব।

এজিএমে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে বিভিন্ন দেশে কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়েও সোচ্চার ছিলেন অনেক শেয়ারহোল্ডার। বিক্ষোভ ও চাপের মুখে কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেয়, বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের মান উন্নয়নে আরও জোরালো ভূমিকা রাখবে ওয়ালমার্ট। এছাড়া প্রতিদিন কোম্পানির ন্যূনতম ৫শ’ কর্মীর বেতন বাড়ানো বা পদোন্নতির সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠানটির কর্মীর সংখ্যা ২০ লাখের বেশি। প্রসঙ্গত, এপ্রিলে রানা প্লাজা ধসে সহস্রাধিক পোশাক কর্মীর মৃত্যুর পর বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশী পোশাকের ক্রেতারা প্রবল চাপের মুখে পড়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকটি শ্রমিক সংগঠন ও এনজিওর উদ্যোগে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উন্নয়নে একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ৪০টি ক্রেতা একটি চুক্তিতে সই করলেও ওয়ালমার্ট ও গ্যাপ এতে যোগ দিতে অস্বীকার করে।

 




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2025