শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০১:৫৮

সিসিক নির্বাচন: অঝোর ধারার বৃষ্টিতে হিসেব-নিকেশ কষছেন সিলেটের ভোটাররা

সিসিক নির্বাচন: অঝোর ধারার বৃষ্টিতে হিসেব-নিকেশ কষছেন সিলেটের ভোটাররা

 

 

 

 

 

 

 

 

 

শীর্ষবিন্দু নিউজ: সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচন যেন দরজায় এসে দাড়িয়েছে। রাত পোহালেই শুরু হবে দোড়ঝাপ। নগরে জলাবদ্ধতার যে অভিযোগ এতোদিন ধরে প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী সমর্থিত প্রার্থী কামরানের বিরুদ্ধে করে আসছিলেন, নির্বাচনের মাত্র একদিন আগে তা আবারো প্রমাণ করে দিতে রাত ১১টা থেকে অঝোর ধারায় বৃষ্টি ঝড়ছে। বৃষ্টির ফোটা কামানের গোলা হয়ে কামরানের বুকে বিঁধলেও, শান্তির ঘুম নিশ্চয়ই হবে আরিফের।

বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় জনসংযোগের শেষ ঘণ্টা হলেও নির্বাচনী প্রচারণা সারারাত ধরেই চলছে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর। তার এই প্রচারণা চালাচ্ছে স্বয়ং প্রকৃতি। বৃষ্টির জলে ভরে উঠছে সিলেট। ডুবছে রাস্তাঘাট। আষাঢ় শুরুর দিন নির্বাচন। এর একদিন আগের রাত থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। নির্বাচনের এই বৃষ্টিতে রাস্তাঘাটের পাশাপাশি ডুবছেন কামরানও। ভোটারের মনে আবারো জাগিয়ে দিচ্ছে জলাবদ্ধাতার ক্ষোভ। অল্প বৃষ্টিতে সিলেট নগরীর রাস্তা-ঘাট পানিতে ডুবে একাকার হয়ে যায়। সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এই নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে রয়েছে প্রচণ্ড ক্ষোভ। আর এ ক্ষোভই এবারের সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কামরানের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে বলে আগে থেকেই মত দিচ্ছিলেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ ও রাজনৈতিক বোদ্ধারা।

ছড়ার উপরে অবৈধ দোকানপাট, মার্কেট নির্মিত হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছে না সিটি কর্পোরেশন। ফলে গোটা নগরীর পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থবির হয়ে পড়েছে। ৫ জুনের জলাবদ্ধতার ব্যাপারে বদর উদ্দিন আহমদ কামরান  বলেন, “সিলেট একটি অতিবর্ষণ প্রবণ এলাকা। হঠাৎ করে যখন অতিবর্ষণ হয়, তখন বিভিন্ন ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। জলাবদ্ধতা যাতে কম হয়, সেজন্য প্রত্যেক ওয়ার্ডে কার্যক্রম চলছে।” তিনি বলেন, “সিটি কর্পোরেশনের ৩৬ জন কাউন্সিলরকে আটজন করে শ্রমিক দেওয়া হয়েছে, দ্রুত খাল-নালা পরিষ্কার করার জন্য। এছাড়াও কিছু অতিরিক্ত শ্রমিক কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। এ অবস্থায় যেখানেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে, দ্রুত পানি নেমেও যাচ্ছে।”

বৃহস্পতিবার নির্বাচনী প্রচারণার শেষ সময় রাত ১১টা থেকে টানা বৃষ্টি  শুরু হয়। শুক্রবার ভোরেও রয়েছে বৃষ্টির আমেজ। এরই মধ্যে নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। রাতে নগরী ঘুরে দেখা গেছে, টানা বৃষ্টিতে নগরীর শিবগঞ্জ, মিরাবাজার, উপশহর, সুবিদবাজার, দরগাগেইট, জিন্দাবাজার, আম্বরখানা, ইলেকট্রিক সাপ্লাই রোড এলাকাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে ৫ জুনেও এসব এলাকা হালকা বৃষ্টিতে যেমন হাঁটু পানিতে ডুবে যায়, তেমনি টানা বৃষ্টি হলে হাঁটু থেকে কোমর তলিয়ে যায়। জলাবদ্ধতা আর বর্জ্য অব্যবস্থপনার কারণেই সাবেক মেয়র কামরানকে করুণ পরিণতি বরণ করতে হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

জলাবদ্ধতার প্রশ্নে প্রচারণার প্রথম দিন থেকেই বিভিন্ন সংলাপে কামরানকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত হতে হয়েছে। অপরিচ্ছন্ন নগরীর দায়ভারও নিতে হয়েছে তাকে। জানা গেছে, সিলেট নগরীর দীর্ঘদিনের সমস্যা জলাবদ্ধতা আর ছড়া খাল দখল নিয়ে মেয়র কামরানের প্রতি নগরবাসীর অভিযোগের যেন শেষ নেই। জলাবদ্ধতার কবল থেকে মুক্তি পাননি নগরবাসী। খোদ মেট্রোপলিটন পুলিশ কার্যালয় ও নগরীর প্রধান এলাকা জিন্দাবাজারে বৃষ্টি হলেই জমে হাঁটু পানি। আবার কোথাও কোথাও কোমর পানি। নগরবাসীর অভিযোগ, জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি সিটি কর্পোরেশন। মাত্র এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে নগরীর অধিকাংশ নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। এই বর্ষা মৌসুমে নগরবাসীকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।

সিলেট ঘুরে দেখা যায়,  সিলেটে রাতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। সকালেই জলাবদ্ধতায় আটকা পড়েন নগরীর বাসিন্দারা। ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় শিবগঞ্জ, মিরাবাজার, উপশহর, সুবিদবাজার, দরগাগেট ও জিন্দাবাজার এলাকায়। এসব এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিভিন্ন ছড়া ও খালের অবৈধ দখল ও কুক্ষিগত করার কারণে দ্রুত পানি সরে যেতে পারে না। আবার দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী মহল নগরীর বিভিন্ন ছড়া ও খালগুলো ধীরে ধীরে অবৈধভাবে দখল করে নিচ্ছে। বিগত দিনে অভিযোগ রয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন কতৃপক্ষ নিরব দর্শকের ভুমিকা পালন করেছেন। ভোটররা মনে করছেন যার বর্হিপ্রকাশ ঘটবে এবারের ১৫ই জুন নির্বাচনে।

 




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *



পুরানো সংবাদ সংগ্রহ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
All rights reserved © shirshobindu.com 2012-2024