শীর্ষবিন্দু নিউজ: যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের অভিযোগে সুইডেনে থাকা মামলা প্রত্যাহার করা হলেও লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, লন্ডনে অবস্থিত ইকুয়েডর দূতাবাসে অ্যাসাঞ্জের রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়ার এক বছর পূর্ণ হলো আজ বুধবার। এ উপলক্ষে ওই দূতাবাসে সাংবাদিকদের দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে এসব কথা বলেন তিনি। অ্যাসাঞ্জ সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর আশঙ্কা, ব্রিটিশ পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে সুইডেনে প্রত্যর্পণ করলে সেখান থেকে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে।
কারণ উইকিলিকস লাখ লাখ মার্কিন গোপন কূটনৈতিক বার্তা ফাঁস করায় দেশটি তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত রয়েছে। অ্যাসাঞ্জ বলেন, ‘আমি বাইরে বের হলেই যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া অনুযায়ী আমাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। গ্রেপ্তার ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তুলে দেওয়ার ঝুঁকি এড়াতে দূতাবাস না ছাড়ার জন্য আমার আইনজীবীরা আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন।’ অ্যাসাঞ্জ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে আমাকে অভিযুক্ত করার ৯৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ আশঙ্কা রয়েছে। তাই সুইডিশ সরকার যদি কাল তাদের জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার অনুরোধ প্রত্যাহার করে নেয়, তবুও আমি এই দূতাবাস ত্যাগ করব না।’ সুইডেন বা যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ এড়াতে লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসে গত বছরের ১৯ জুন আশ্রয় নেন অ্যাসাঞ্জ। এই এক বছরে দূতাবাস ভবনের বারান্দার বাইরে কখনো যাননি তিনি। ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলায় অ্যাসাঞ্জকে সুইডেনে জিজ্ঞাসাবাদের কথা ছিল। তবে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সুইডেন কর্তৃপক্ষ তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তর করতে পারে এবং গোপনীয় সরকারি তথ্য ফাঁসের অভিযোগে সেখানে তাঁর মৃত্যুদণ্ড হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অ্যাসাঞ্জের রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা গত বছরের আগস্ট মাসে অনুমোদন করে ইকুয়েডর। তবে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট করে দিয়েছে, ইকুয়েডর দূতাবাস থেকে বের হলেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে। ইকুয়েডরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাতিনো রোববার অ্যাসাঞ্জের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন। সাক্ষাতের পর তিনি জানিয়েছেন, যদিও অ্যাসাঞ্জ বর্তমানে সীমিত জায়গার মধ্যে আটকা রয়েছেন, তার পরও তিনি ‘ভালো মানসিক অবস্থা’র মধ্যে রয়েছেন। তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো আমি সামনাসামনি বসে তাঁকে বলতে পেরেছি যে ইকুয়েডর তাঁর মানবাধিকার রক্ষার বিষয়ে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তৃতীয় কোনো দেশে তাঁকে প্রত্যর্পণ এড়াতে আশ্বাস পেতে আমরা অব্যাহতভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি।
এদিকে অ্যাসাঞ্জের ভবিষ্যত্ নিয়ে ইকুয়েডরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিকার্দো পাতিনো গত সোমবার ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগের সঙ্গে বৈঠক করেন। তবে উল্লেখযোগ্য কোনো সফলতা ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বৈঠক শেষে পাতিনো বলেছেন, তাঁর দেশ অ্যাসাঞ্জকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া অব্যাহত রাখবে।
Leave a Reply