আরেক প্রতারণার মামলায় রেজওয়ানা খালেদ ইমাকে ৩ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল মহানগর মুখ্য হাকিম আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। আদালত ও গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ভিওআইপি ব্যবসার লাইসেন্স পাইয়ে দেয়ার কথা বলে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় ইমা ও তার স্বজনরা। পরে লাইসেন্স ও টাকা কোনটিই দিতে পারেনি।
এ ঘটনায় গত ১০ই জুন ওয়ারী থানায় মামলা হয়। ওই মামলার আসামি হিসেবে ইমাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত নামঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক তদন্ত কর্মকর্তা ইমাকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। প্রতারণায় জড়িত আরও কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতার তথ্য দেয় সে। কিন্তু জেল গেটে লোকজনের ব্যাপক হট্টগোল ও নেটের বাইরে থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করায় প্রতারণার রহস্য উদঘাটনে বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হয় জিজ্ঞাসাবাদকারী গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে। বিষয়টি আদালতকে অবহিত করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এস আই সবিন চন্দ্র মাহাতো বলেন, অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা ও ব্যবসার লাইসেন্স প্রদানের বৈধ ক্ষমতা আছে কিনা, না থাকলে কোন উদ্দেশ্যে বাদীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছে সেসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ওয়ারী থানা সূত্র জানায়, ভিওআইপি ব্যবসার লাইসেন্স পাইয়ে দেয়ার কথা বলে ২০১১ সালের ১১ই মার্চ মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ইমা, তার ভাই তানভীর খালেদ ও তাদের পিতা আলমগীর খালেদ ১১ লাখ টাকা নেয়। টাকা লেনদেন হয় ওয়ারী থানাধীন র্যাঙ্কিন স্ট্রিট সংলগ্ন সিলভারডেল স্কুলের সামনের রাস্তায়। এ সংক্রান্তে ১৫০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে আসামি তানভীর খালেদ ও তার বোন ইমার স্বাক্ষর রয়েছে। নির্ধারিত সময়ে লাইসেন্স দেয়ার কথা বললেও তারা দিতে পারেনি। পরে টাকা ফেরত চাইলে টালবাহানা শুরু করে। বিভিন্ন ভাবে তাদের চাপ প্রয়োগ করলে আসামিরা বিভিন্ন দফায় ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা পরিশোধ করে। বাকি টাকা আত্মসাৎ করে।
তদন্ত সূত্র জানায়, ইমা, তার ভাই তানভীর খালেদ ও তাদের পিতার বিরুদ্ধে বনানী, শেরে বাংলানগর, ওয়ারী ও রমনা থানায় চারটি মামলা হয়েছে। গোয়েন্দা কার্যালয়ে আরও অসংখ্য লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এছাড়া, রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য ভুক্তভোগী সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি করেছেন। দীপঙ্কর সেনগুপ্ত নামে একজন তরুণ নাট্যনির্মাতার অভিযোগের সূত্র ধরে গত শুক্রবার রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে গ্রেপ্তার হয় ইমা। পরে দুই মামলায় দু’দিনের রিমান্ডে নেয় গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তারের পরপরই ইমা ও তার সহযোগীদের ভয়ঙ্কর প্রতারণার নানা তথ্য প্রকাশ হয়ে পড়ে।
Leave a Reply