শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান জানিয়েছেন, রিজার্ভের চুরি হওয়া অর্থের আট কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনে গেছে। এর মধ্যে ফিলিপাইনের অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কর্তৃপক্ষ সে দেশের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের ছয়টি হিসাব জব্দ করেছে। ৬৮ হাজার ডলার এসব হিসাবে রয়ে গেছে। আর সাত কোটি ১০ লাখ ৩২ হাজার ডলারের হদিস মিলছে না।
অর্থ চুরির বিষয়টি সম্পর্কে জানতে আজ রোববার সকাল সোয়া ১০টার দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকে যান অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য এম আসলাম আলম। পরে তিনি ও ডেপুটি গভর্নর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির বিষয়টি প্রায় মাসখানেক অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য এম আসলাম আলমকে জানানো হয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন।
এম আসলাম আলম বলেন, অর্থ চুরির ঘটনাটি ঘটেছে ৫ ফেব্রুয়ারি। এরপর ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড সভা হয়েছে। ২৯ ফেব্রুয়ারি ও ১ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের অডিট কমিটির সভা হয়েছে। কোনো সভাতেই বিষয়টি তাঁকে জানানো হয়নি। এই তিন বৈঠকের কোনোটিতেই বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি। বিষয়টি প্রায় মাসখানেক তাঁর কাছে অজানা ছিল। এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘আমি মনে করি, এটা অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংকের আমাদের ও সরকারকে জানানো উচিত ছিল। কেন জানায়নি, আমি জানি না।’
এদিকে, সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সাংবাদিকদের বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক তাঁকেসহ অন্যদের বিষয়টি না জানিয়ে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরি হয় ৫ ফেব্রুয়ারি।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সাইবার আক্রমণে ৩৫টি ভুয়া পরিশোধ নির্দেশের মাধ্যমে ৯৫ কোটি ১০ মার্কিন ডলার বা প্রায় ৭ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা স্থানান্তরের প্রস্তাব পাঠানো হয়। তার মধ্যে ৩০টি নির্দেশ আটকানো সম্ভব হয়। তাতে ৮৫ কোটি ডলার বেহাত হওয়া প্রতিহত করা গেছে। তবে পাঁচটি পরিশোধ নির্দেশের বিপরীতে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার বা প্রায় ৮০৮ কোটি টাকা ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কায় চলে যায়। তার মধ্যে শ্রীলঙ্কা থেকে ২ কোটি ডলার উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে। ফিলিপাইনে যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার বা প্রায় সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।