সুমন আহমেদ: রোববার স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৫টায় পূর্ব লন্ডনের ইমপ্রেশনস ইভেন্টস ভেন্যুতে বাঙালি সংস্কৃতি দিয়েই বরণ করা হলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতজামাই ও শেখ রেহানার মেয়ে কাউন্সিলর টিউলিপ সিদ্দিকীর বর ক্রিশ্চিয়ান সেইন্ট জন পার্সিকে। বিবাহোত্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠান শুরুর প্রায় আধা ঘণ্টা পর টিউলিপের খালা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানস্থলে এসে পৌঁছেন। তিনি অনুষ্ঠানস্থলে এসে পৌঁছলে তাঁর পায়ে হাত দিয়ে সালাম করেন টিউলিপের বর ক্রিশ। উত্তরে প্রধানমন্ত্রী মাথায় হাত দিয়ে ভাগনির জামাইকে আশির্বাদ করেন। দীর্ঘ সাড়ে তিন ঘণ্টা উপস্থিত থেকে ভিন্ন সংস্কৃতির জামাই ক্রিসকে সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী উপভোগ করেন পুরোপুরি বাঙালিয়ানা দিয়ে সাজানো অনুষ্ঠানটি। বর-কনের পাশে আসন গ্রহণ করার পর প্রধানমন্ত্রীর সামনেই পরিবেশিত হয় ক্লাসিক্যাল নৃত্য, ফোক নৃত্য, গীতিনাট্যা, গানসহ বিভিন্ন পর্ব।
বিয়েতে টিউলিপ শাড়ি ও বর ক্রিস পরেছিলেন শেরওয়ানী ও পাগড়ি। আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ব্রিটিশ শ্যাডো অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এমিলি থর্নব্যারি এমপি, হোম অফিস সিলেক্ট কমিটির চেয়ার কিথ ভাজ এমপি, সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী ফ্রাঙ্ক ডবসন এমপি, সাবেক মন্ত্রী জিম ফিটজ পেট্রিক এমপি, স্টিফেন টিমস এমপি, লিন ব্রাউন এমপি ও রোশনারা আলী এমপিসহ বেশ কয়েকজন ব্রিটিশ রাজনীতিক, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়, তাঁর স্ত্রী ক্রিস্টিনা ওয়াজেদ, প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে পুতুল, পুতুলের স্বামী, শেখ রেহানার ছেলে রেজোয়ান সিদ্দিকী ববি, ছোট মেয়ে রুপন্তিসহ তাদের আত্মীয় স্বজন, যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজারুল কায়েস, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, ব্রিটেনের বাংলা মিডিয়ার সাংবাদিকসহ প্রায় সাড়ে তিনশ অতিথি বিয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে ঘুরে প্রতিটি টেবিলে বসা অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রীর পর বর-কনে ক্রিশ এবং টিউলিপও প্রতিটি টেবিলে গিয়ে অতিথিদের সঙ্গে ঘুরে ঘুরে কথা বলেন। এ সময় টিউলিপ ও ক্রিশ সাংবাদিকদের টেবিলে এলে একজন সাংবাদিক একটি খাম গিফট হিসেবে তাঁকে দিতে চাইলে তিনি জানান বিয়েতে তাঁরা কোনো গিফট গ্রহণ করছেন না। এরপরও যারা গিফট দিচ্ছেন বা দিয়েছেন তা সব দিয়ে দেওয়া হচ্ছে স্ট্রিট ওয়াইজ নামে একটি চ্যারিটিতে।
ভোজন পর্ব শেষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ায় অতিথিদের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বর-কনে। বর ক্রিশ্চিয়ান সেইন্ট জন পার্সি ভাঙা ভাঙা বাংলায় কথা বলে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। জয় বাংলা বলে তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করেন। টিউলিপ তার বক্তৃতায় সবার কাছে তাঁর নতুন জীবনে প্রবেশের মুহূর্তে দোয়া চান। ব্রিটিশ এমপিদের মধ্যে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক ডবসন, হোম অফিস সিলেক্ট কমিটির চেয়ার কিথ ভাজ ও রোশনারা আলী এমপিও বক্তব্য রাখেন। সবশেষে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে টিউলিপের মা শেখ রেহানা মেয়ের দাম্পত্য জীবনের শুরুতে সবার কাছে দোয়া কামনা করেন। তিনিও বক্তব্য শেষ করেন জয়বাংলা বলে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর রাজনীতিহীন সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় ব্রিটিশ এমপিসহ সবাইকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার ধন্যবাদ জানান।
Leave a Reply