শীর্ষবিন্দু আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক: জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির প্রতিবাদে বাংলাদেশ থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করেছে তুরস্ক। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েপ এরদোগানকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়েটার্স এ খবর দিয়েছে।
গত মঙ্গলবারও নিজামীর মৃত্যুদন্ডে বাংলাদেশের প্রতি নিন্দা জানিয়েছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোগান। তিনি বলেছেন, একজন মুজাহিদকে ফাঁসি দেয়ার মানসিকতার আমি নিন্দা জানাই। নিজামীর বয়স ৭০ বছরের ওপরে। আমি বিশ্বাস করি তিনি কোনো অপরাধ করতে পারেন না।
বৃহস্পতিবার থেকে রাষ্ট্রদূত ছুটিতে যাচ্ছেন। কোনো দেশের রাষ্ট্রদূত ছুটিতে বা অন্য কোনো কারণে দেশ ত্যাগ করলে নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে তা অবহিত করতে হয়। তুরস্কের রাষ্ট্রদূত গতকাল রাতেই ঢাকা ছেড়ে গেছেন।
বার্তা সংস্থা এপি’র এক সংবাদে বলা হয়েছে, গতকাল আঙ্কারায় এক ভাষণে এরদোগান বাংলাদেশ থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি নিজামীর ফাঁসির বিরুদ্ধে ইউরোপিয় ইউনিয়নের (ইইউ) সোচ্চার না হওয়ার সমালোচনা করেছেন। তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক কোনোভাবেই তারা রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের বিষয়টি জানেন না। গত বুধবার তুরস্কের দূতাবাস এক চিঠিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছে, বৃহস্পতিবার থেকে রাষ্ট্রদূত ছুটিতে যাচ্ছেন।
ইইউকে উদ্দেশ্য করে এরদোগান বলেন, আপনারা কি মৃত্যুদন্ডের বিরুদ্ধে ছিলেন না। ফাঁসিতে ঝোলানো ব্যক্তিটি (নিজামী) মুসলিম ছিলেন বলেই ইইউ উচ্চবাচ্য করছে না।
তিনি বলেন, এটা ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছুই না। বারবার অনুরোধ সত্বেও তাকে মৃত্যুদ- দেয়া হয়েছে। এটা কোনো সুশাসনও নয়, নয় কোনো গণতান্ত্রিক মানসিকতা। মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদ- মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কার্যকর করা হয়। এর প্রতিবাদে পরদিন তুরস্কে কয়েকটি বিক্ষোভ হয়েছে। নিজামীতুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কে ফাঁসি দেয়ায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেয়।
এতে বলা হয়েছে, তারা অত্যন্ত বেদনার সাথে নিজামীর ফাঁসি কার্যকর হওয়ার খবর পেয়েছেন। তুরস্ক বিশ্বাস করে নিজামীর এমন শাস্তি প্রাপ্য নয়। তুরস্ক এই ফাঁসির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। বাংলাদেশী ভ্রাতৃপ্রতীম মানুষ, যারা সামাজিক শান্তি রক্ষায় কাজ করেন, তাদের সাথে অব্যাহতভাবে সংহতি বজায় রাখবে তুরস্ক। বিবৃতিতে বলা হয়, তিন বছর ধরে বাংলাদেশকে শাস্তি হিসেবে ফাঁসি বন্ধ করার জন্য আহবান জানিয়ে আসছে তুরস্ক।
কেননা এতে সামাজিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে পারে। এ ব্যাপারে তুরস্ক উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধের বিচারের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা দেশগুলোর মধ্যে তুরস্ক অন্যতম। এর আগে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমকে ফাঁসি না দেয়ার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লিখেছিলেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আহমেদ গুল।