প্রযুক্তি আকাশ ডেস্ক: নতুন করে ফেসবুকের বিরুদ্ধে পুরনো অভিযোগ উঠেছে। বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছে, ফেসবুক নতুন কৌশলে ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করে বিজ্ঞাপনকারীদের কাছে বিক্রি করছে। এবার ফেসবুকের নতুন অস্ত্র রিঅ্যাকশন বাটন! এ খবর দিয়েছে ক্রিশ্চিয়ান সাইয়েন্স মনিটর।
খবরে বলা হয়েছে, লাইক বাটনের পাশাপাশি ফেব্রুয়ারিতে নতুন আরো পাঁচটি রিঅ্যাকশন বাটন যোগ করে ফেসবুক। ফেসবুক ব্যবহারকারীরা বহুদিন ধরে লাইক বাটনের সঙ্গে ‘ডিজলাইক’ বাটন প্রবর্তনের কথা বলে আসছিল। কিন্তু ফেসবুক কর্মকর্তারা বলেছিলেন, তারা ফেসবুকে নেতিবাচকতা আনতে চান না। ডিজলাইক বাটনের পরিবর্তে নতুন ৫টি বাটন যোগ করা হয়। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা কোনো পোস্টের ব্যাপারে নিজেদের প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারবেন। নতুন এ পাঁচটি বাটনের নাম দেয়া হয়েছে: লাভ, হা হা, ওয়াও, স্যাড ও অ্যাংগ্রি!
কিন্তু বেলজিয়ামে এ রিঅ্যাকশন বাটনের কারণেই ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, কী ধরনের পোস্টে কোন ধরনের প্রতিক্রিয়া ব্যবহারকারীরা দেখান, তা বিশ্লেষণ করে তথ্য-উপাত্ত বিক্রি করা হচ্ছে বিজ্ঞাপনকারীদের কাছে। বেলজিয়ামের কেন্দ্রীয় পুলিশ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ‘ফেসবুক আইকনের সংখ্যা ছয়ে উন্নীত করে, আপনার প্রতিক্রিয়া আরো সহজে প্রকাশের সুযোগ করে দিয়েছে। এতে করে স্বয়ংক্রিয় অ্যালগরিদম আরো কার্যকর হয়ে উঠেছে। সামান্য একটি মাউস ক্লিকে ফেসবুক জানতে পারছে আপনি কিসে খুশি হন।
যদি দেখা যায় যে, আপনি খোশ মেজাজে আছেন, তখন ফেসবুক বুঝে যায় এ মুহূর্তে আপনার ওপর বিজ্ঞাপনের প্রভাব পড়বে বেশি। এমনকি বিজ্ঞাপনদাতাদেরও জানিয়ে দেয়া হয়, এই সময়ে আপনার সামনে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন হলে ভালো ফল আসবে।’ ফেসবুকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বা প্রাইভেসি নিয়ে উদ্বেগ এবারই প্রথম নয়। ইউরোপে এ কোমপানির বেশ কয়েকটি পণ্য কর্তৃপক্ষ নজরে রেখেছে। কারণ, ইউরোপজুড়ে প্রাইভেসি আইন বেশ কড়া।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আইন অনুযায়ী, কোনো গ্রাহকের তথ্য সংগ্রহ করতে হলে তার অনাপত্তি লাগবে। ২০১৫ সালের মার্চে ইউরোপের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এক প্রতিবেদনে জানান, ফেসবুকে কেউ ঢুকলেই তার তথ্য সংগ্রহ করে রাখা হয়। এমনকি যাদের কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই, তাদের তথ্যও সংগ্রহ করা হয়! এ বছরের মার্চে জার্মানির একটি আদালত একটি কোমপানির ফেসবুক লাইক বাটন ব্যবহারের বিরুদ্ধে রায় দেয়।
স্থানীয় একটি সংগঠন অভিযোগ করেছিল, ওই কোমপানির ওয়েবসাইটে যারাই ভিজিট করেন, তাদের তথ্য ফেসবুকের কাছে চলে যায়। যদিও তারা ফেসবুকের লাইক বাটন টিপেন না। যুক্তরাষ্ট্রে ফেসবুকের বিরুদ্ধে সমপ্রতি অভিযোগ উঠে, তারা মানুষের গাত্রবর্ণের ওপর ভিত্তি করে তথ্য সংগ্রহ করছে এবং বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে তা বিক্রি করছে।