শীর্ষবিন্দু নিউজ: ইলিশ মৌসুমের শুরুতেই বিষখালী নদীতে ইলিশের আকাল দেখা দিয়েছে। ফলে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার প্রায় ৬শ’ জেলে পরিবার হাহাকার চলছে। সরকারিভাবে মাত্র ১’শ ৯৮টি জেলে পরিবারকে ফেব্রুয়ারি-মে মাস পর্যন্ত মাথাপিছু প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হলেও বাকী ৪শ’ ২ জেলে পরিবার কিছুই পাচ্ছে না।
অন্যদিকে নদীতে মাছ না পেয়ে জেলেরা খালি হাতে ফিরছেন। নদীতে ইলিশ না পেয়ে অলস সময় কাটাচ্ছেন তারা। বর্তমানে ইলিশের মৌসুম শুরু হলেও ইলিশের দেখা পাচ্ছে না জেলেরা। তারা নদীতে দিনরাত জাল ফেলে রাখলেও ইলিশ ধরা পড়ছে না। ফলে জেলেদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা। এদের বেশিরভাগই বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করে নৌকা ও জাল কিনে নদীতে নেমেছে।
কিন্তু দিনরাত জাল ফেলেও মাছ না পাওয়ায় তারা নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। এনজিও’র ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় তাদের সঙ্গে একদিকে হচ্ছে বাকবিতণ্ডা অন্যদিকে আত্মগোপন করে থাকতে হচ্ছে অনেক জেলেকে। অন্যকোন আয়ের উপায় না থাকায় বেকার হয়ে পড়ছেন উপজেলার এ জেলে পরিবারগুলো। জেলেদের পরিবারের সদস্যরা প্রায়ই অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। জেলে পরিবার সরকারিভাবে যে সাহায্য কিছুদিনের জন্য পায় তা পরিবারের সদস্যদের চাহিদার তুলনায় খুবই সামান্য। আর এ সব সমস্যার কারণে অনেক জেলেই মাছ ধরা বাদ দিয়ে ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালানোসহ বিভিন্ন পেশায় যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রুহুল কুদ্দুস জানান, উপজেলার ৬ ইউনিয়নের প্রায় ৬শ’ জেলে পরিবারদের মধ্যে ১’শ ৯৮টি জেলে পরিবারকে ফেব্রুয়ারি-মে মাস পর্যন্ত প্রতিমাসে মাথাপিছু ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বাকী ৪শ’ ২ জেলে পরিবার কিছুই পাচ্ছে না। তিনি আরও জানান, এখনও ইলিশ কম বেশি ধরা পড়ছে। কিন্তু শ্রাবণের শেষের দিকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলার বিষখালি নদীর একাধিক জেলেরা জানান, তাদের একমাত্র পেশা মাছ ধরা এবং তা দিয়ে সংসার চালানো। কিন্তু বর্তমান মৌসুমে নদীতে ইলিশ মাছ না পেয়ে তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। তারা নদীতে দিনরাত জাল ফেলে রাখলেও ইলিশ ধরা পড়ছে না। কেউ কেউ এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশা শুরু করে সংসার চালাচ্ছেন। সরকার সহজ শর্তে ঋণ দিলে তাদের কিছুটা মাথা গোজার জায়গা হতো বলে জানান জেলেরা।
Leave a Reply