স্বদেশ জুড়ে: অনেক জটিলতার পর নাম নিয়ে অবশেষে ঢাকা মোহনগঞ্জ আন্তঃনগর ট্রেনটির নাম হয়েছে ‘হাওর এক্সপ্রেস’। বৃহস্পতিবার দুপুরে রেলপথমন্ত্রী মো: মুজিবুল হক তার কার্যালয়ে গণমাধ্যমকে এ নামটি নিশ্চিত করেন।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী এ নামের প্রস্তাব দেন। আগামী মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) এ ট্রেন উদ্ধোধন হবে। মোহনগঞ্জে রেলপথমন্ত্রী এ ট্রেনের উদ্বোধন করবেন। এ ট্রেনের উদ্বোধনের মধ্যে নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জ তথা ভাটি বাংলা হিসেবে পরিচিত হাওরাঞ্চলবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি পূরণ হচ্ছে।
রেলমন্ত্রী বলেন, এ ট্রেনটির নাম কি হবে তা নিয়ে বিশিষ্ঠজনদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন নাম প্রস্তাব আসে রেলওয়ের কাছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সেসব নাম তুলে ধরেন। যেসব নাম এসেছে সব নামই প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন। এরপর হাওর অঞ্চলবাসীকে গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ ট্রেনের নাম দেন হাওর এক্সপ্রেস। এ নাম নিয়ে এখন আশা করি কারো দ্বিমত থাকবে না। কারণ নামটি চমৎকার। সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে এ নাম।
গত ডিসেম্বরে নেত্রকোনা বিজয়মেলায় রেলমন্ত্রী মো: মুজিবল হক জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জুলাই মাসের মধ্যে আন্তঃনগর ট্রেন সার্ভিস চালুর আশ্বাস দেন। কিন্তু বিপত্তি বাধে ট্রেনের নাম নিয়ে। আন্তঃনগর ট্রেন সার্ভিস চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর নামকরণের প্রস্তাব চাওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য আশরাফ আলী খান খসরু আন্তঃনগর ট্রেনের নাম প্রস্তাব করেন কংস এক্সপ্রেস। মদন মোহনগঞ্জ খালিয়াজুরী আসনের সংসদ সদস্য রেবেকা মমিন ট্রেনের নাম ভাটি বাংলা এক্সপ্রেস এবং নেত্রকোনা জেলা সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী ট্রেনের নাম সুনেত্র এক্সপ্রেস। কবি নির্মলেন্দু গুণ এ নামের প্রস্তাব দেন কাঁশবন এক্সপ্রেস। অবশেষে হাওরকে গুরুত্ব দিয়ে এ ট্রেনের নামকরণ হয় হাওর এক্সপ্রেস।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিকভাবে ট্রেনটিতে ১০টি বগি সংযোজন করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১টি থাকছে ১ম শ্রেণী, ২টি শোভন চেয়ার। অন্যগুলো শোভন সিটের। পরে বগিসহ অন্যান্য সুবিধাদি বাড়ানো হবে। বুধবার পর্যন্ত নতুন এ রুটের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়নি। উদ্বোধনের পর আন্তঃনগর এ ট্রেনটি ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে রাত ১১টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে সকাল ৬টা ১০ মিনিটে মোহনগঞ্জে পৌঁছবে। সকাল সাড়ে ৮টায় মোহনগঞ্জ স্টেশন থেকে ছেড়ে গিয়ে দুপুর ২টা ১০ মিনিটে ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছবে। ঢাকা থেকে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ রেলস্টেশনের দূরত্ব ২১০ কিলোমিটার। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় এবং চলাচলরত বাস সার্ভিসের মান খারাপ হওয়ায় দেশে আন্তঃনগর ট্রেন সার্ভিস চালুর পর থেকেই নেত্রকোনা জেলাবাসী ও সুনামগঞ্জের বেশ কয়েকটি উপজেলার জনগণ ঢাকা-মোহনগঞ্জ রেলপথে আন্তঃনগর ট্রেন সার্ভিস চালুর দাবি জানিয়ে আসছেন।
Leave a Reply