নারায়ণগঞ্জে সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের ফরেন এক্সচেঞ্জ শাখার (আগের মহিলা শাখা) প্রায় ৫১ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও দুর্নীতির অভিযোগে ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপক (বর্তমানে বরখাস্তকৃত) ও সিনিয়র অফিসারসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার বিকেলের দুদকের ঢাকা-২ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ সহকারী পরিচালক সিরাজউদ্দিন বাদী হয়ে মামলা তিনটি দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা দন্ডবিধির ৪০৯/১০৯ এবং তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ ২ নম্বর আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে মামলা উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, ফতুল্লার বিসিক শিল্পনগরীর মিলেনিয়াম নীট ওয়্যার লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও এমডিসহ পাঁচজন এবং ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপক ও সিনিয়র অফিসার পরস্পর যোগসাজশ করে অসৎ উদ্দেশে অবৈধভাবে নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য ২০০২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ঋণ মঞ্জুরি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে ব্যাক টু ব্যাক (বিটিবি) এলসির বিপরীতে ১২ কোটি ২০ লাখ ৬৫ হাজার ৪০৬ টাকা প্রদান ও গ্রহণ করে সুদ মূলে ১৭ কোটি ৭১ লাখ ৭৪ হাজার ১৩৪ টাকা আত্মসাৎ করেছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের জানান, ৫০ কোটি ৯০ লাখ ৮৭ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলাটি তিনটি রেকর্ড করা হয়েছে। মামলাগুলো দুদক তদন্ত করবে।
মামলার আসামিরা হলেন- সোনালী ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ শাখার (সাবেক মহিলা) সাবেক ব্যবস্থাপক (বর্তমানে বরখাস্ত) আব্দুস সামাদ, সিনিয়র অফিসার সিরাজুল হক, শহরের কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা ফতুল্লার বিসিক শিল্পনগরীর মিলেনিয়াম নিট ওয়্যার লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমানে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুল হক, গাজীপুরের মৌচাকের বাসিন্দা চেয়ারম্যান এমদাদুল হক, ফতুল্লার গাবতলীর বাসিন্দা সাবেক পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, ১২৫ বিবি রোডের বাসিন্দা ফিরোজ ওয়াহিদ, ১৫৭/১ বিবি রোডের বাসিন্দা সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান, শহরের মিশনপাড়া এলাকার বাসিন্দা গোদনাইল পাঠানটুলীর ওয়াটার ওয়ার্কার্স রোডের ব্যবস্থাপনা অংশীদার ফিরোজ আহম্মেদ, ফরিদ আহমেদ, নূরুল ইসলাম, জাকিয়া আহম্মেদ, ৩৬/১ নিউ চাষাঢ়ার বাসিন্দা মেসার্স শুভ ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম, নরসিংদীর পলাশ থানার সুলতানপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রশিদ মিয়া।
একইভাবে বিআর ফ্যাশনের চারজন অংশীদার এবং ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপক ও সিনিয়র অফিসার পরস্পর যোগসাজশ করে অসৎ উদ্দেশে অবৈধভাবে নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য ১৯৯৯ সালের ২২ অক্টোবর থেকে ২০১২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে আর্ন্তজাতিক ঋণ মঞ্জুরি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে ব্যাক টু ব্যাক (বিটিবি) এলসির বিপরীতে ১০ কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার ৭১৩ টাকা আত্মসাৎ করেছে। এছাড়া মেসার্স শুভ ফ্যাশনের দু’জন স্বত্বাধিকারী এবং ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপক ও সিনিয়র অফিসার পরস্পর যোগসাজশ করে অসৎ উদ্দেশে অবৈধভাবে নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য ২০০৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে আর্ন্তজাতিক ঋণ মঞ্জুরি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে ব্যাক টু ব্যাক (বিটিবি) এলসির বিপরীতে ২২ কোটি ৯১ লাখ ৬২ হাজার ৫২৪ টাকা আত্মসাৎ করেছে।
Leave a Reply