বিনোদন ডেস্ক: বাংলাদেশের মেয়ে ফারিয়া আলমের রয়েছে অনেক প্রেমিক। বলিউড অভিনেতা সালমান খান তাদের একজন। ফারিয়া আলম ও বলিউডের হার্টথ্রব নায়ক সালমান খানের সম্পর্ক নিয়ে সরব হয়ে উঠেছিল পশ্চিমা মিডিয়া।
এমনও রটেছিল যে, ইংল্যান্ড ফুটবল দলের ম্যানেজার ভেন গোরান এরিকসনের সঙ্গে ফারিয়া আলমের যৌন সম্পর্ক নিয়ে লেখা তার আত্মজীবনী ‘ভেন: মাই স্টোরি’ প্রকাশ হওয়ায় এসব আলোচনা ফের সামনে চলে এসেছে। এরিকসন যেমন এক প্রেমিকার কাছে দৈহিক শান্তি খুঁজে পাননি, তেমনি ফারিয়া-ও তার প্রেমিক পুরুষের তালিকা বাড়িয়ে গেছেন একের পর এক। এজন্য এরিকসনকে বলা হয় লেডি কিলার। তার শিকারে পরিণত হয়েছেন অনেক নারী। সে আরেক অধ্যায়।
ওদিকে সালমান খানের সঙ্গে ফারিয়া আলমের সম্পর্ক নিয়ে যখন রিপোর্ট প্রকাশিত হয় তখন সালমান খান নিজে বাধ্য হয়ে একটি বিবৃতি দেন। এতে তিনি বলেন, ফারিয়া নামে কে ওই নারী সে সম্পর্কে তার কোন ধারণা নেই। এমনকি তাকে কোন দিন দেখেছেন কিনা সে সম্পর্কেও তিনি সংশয় প্রকাশ করেন। সালমান খান লিখেছেন, আমার যত বন্ধু বা বান্ধবী ছিল তাদের সবার কথা আমার মনে আছে। কিন্তু এখন যার কথা বলা হচ্ছে তা একটি নির্ভেজাল ভুল। এরিকসন তার আত্মজীবনীতে স্বামীর কাছ থেকে কিভাবে ন্যান্সি ডেলওলিওকে কেড়ে এনেছিলেন সে সম্পর্কে বলছেন- আমার সাবেক স্ত্রী অংকির কথাই সত্য হলো।
একদিন ন্যান্সির দেয়া নৈশভোজের সময় এক পর্যায়ে ন্যান্সিকে একা রুমে পেয়ে গেলাম। তখন ওই রুমে আমি আর ন্যান্সি ছাড়া আর কেউ ছিল না। তখন ন্যান্সি আমাকে জিজ্ঞাসা করলো, কবে আমি তাকে দুপুরের খাবার আমন্ত্রণ জানাতে যাচ্ছি। আমি তাকে বললাম যখন সে পছন্দ করবে। জবাবে ন্যান্সি বললো তাহলে আগামীকাল? আপনার বাসায় হলে কেমন হয়? সে জানতে চাইলো। তাকে বললাম, কোন অসুবিধা নেই। আমরা দুপুরের খাবার খেলাম। সেটা সম্ভবত ছিল কিছু টোস্ট। তবে ন্যান্সি আমার বাসায় স্রেফ খাবারের জন্য আসেনি! তার উদ্দেশ্য ছিল অন্য।
এরপর এক গ্রীষ্মে ন্যান্সি আমাকে বললো- তার নিজের বোট- ন্যান্সি ওয়ান-এ করে তার স্বামী গিয়ানকারলোর সঙ্গে আমি তার সঙ্গে যোগ দিতে আগ্রহী কিনা। আমাকে দাওয়াত দেয়ার বিষয়ে গিয়ানকারলোকে জানিয়েছিল সে। ওই সফরটি ছিল অত্যন্ত চমকপ্রদ। আমি ন্যান্সির সঙ্গে ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে গেলাম। সেখানে আমরা এমন স্থানে বসলাম যাতে দু’জনে দু’জনকে দেখতে পাই। এরপর ন্যান্সি ও গিয়ানকারলো ফিরে যায় স্টকহোমে। তাদেরকে আমি একটি লিমুজিন পাঠাই। তাতে ছিল শ্যাম্পেন আর গোলাপ ভর্তি। তাদেরকে বলি আরল্যান্ড বিমানবন্দর থেকে তা নিয়ে নিতে। আমার এক বন্ধু সবার জন্য একবার বিনোদনের বিভিন্ন আয়োজন করলো। তাতে রইল বেলুনে চড়া।
এক পর্যায়ে সে গিয়ানকারলোকে তাদের হোটেল কক্ষে নিয়ে যায় যাতে ন্যান্সির সঙ্গে আমি সময় কাটাতে পারি। এতে গিয়ানকারলোর জন্য আমার মন খারাপ হলো। তিনি ভাল মানুষ। স্ত্রীকে খুব ভালবাসেন। তিনি সব সময় ন্যান্সির ব্যাগ বহন করেন। তিনি বলেন, ন্যান্সির হাত অনেক খোলা। মানে সে অনেক অর্থ খরচ করে। তার মন পাওয়া কঠিন। আমি মনে করলাম এ কথা বলে গিয়ানকারলো হয়তো আমাকে বোঝাতে চাইছেন যে আমি যেন ন্যান্সিকে তার কাছ থেকে কেড়ে না নেই। আমিও যেন তার কথা বুঝে গেলাম। ব্যক্তিগতভাবে আমি কারও সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ানো পছন্দ করি না। কিন্তু এরই মধ্যে ন্যান্সির মাথা বিগড়ে গেছে। সে বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে আর গিয়ানকারলোর সঙ্গে থাকতে চায় না। এখন বিষয়টি গিয়ানকারলোর সঙ্গে আমাকেই মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে। আমার তখন সহকারী ম্যানেজার লুসিয়ানো স্পিনোসি। তাকে বললাম, আমি ন্যান্সি ও আমার মধ্যকার সম্পর্কটা তার স্বামীর কাছে তুলবো।
কিন্তু স্পিনোসি সজোরে দেয়ালে আঘাত করে বলল- না। তা করো না। তুমি ইতালির মানুষ চেনো না। সে তোমাকে গুলি করে মেরে ফেলতে পারে। স্পিনোসি যত যা-ই বলুক আমি জানি এ কথা গিয়ানকারলোর কাছে আমার তুলতেই হবে। তাই আমি তাকে ফোন করলাম। বললাম, পরের দিন আমি কি তার রোমের ফ্লাটে তার সঙ্গে দেখা করতে পারি কিনা। আমাকে অনুমতি দেয়া হলো। আমি যখন তার বাসায় পৌঁছলাম তখন গিয়ানকারলো ছিলেন ফুরফুরে মেজাজে। তিনি আমাকে তার ভাল বন্ধু হিসেবে অভিহিত করলেন। আমাকে কিছু শ্যাম্পেন দিলেন পান করতে। সেখানে উপস্থিত ন্যান্সিও। সে ছিল খুব নার্ভাস। সিঁড়ি দিয়ে একবার উপরে উঠছে, আবার নামছে। এক জায়গা সে বসে থাকতে পারছে না। বিভিন্ন বিষয়ে গিয়ানকারলোর সঙ্গে আমার আলাপচারিতা চলতে লাগলো।
শেষ পর্যায়ে আমি তাকে বললাম, আমি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাই। এ কথা সে কথার পর ব্যাখ্যা করে বললাম, তার স্ত্রীকে আমি ভীষণ পছন্দ করি। তাকে শুধু পছন্দই করি না- বলা যেতে পারে তাকে আমি ভালবাসি। সে-ও আমাকে ভালবাসে। আমার মনে হলো গিয়ানকারলো কখনও তার স্ত্রীকে সন্দেহ করেনি। ভাবেনি যে, তার স্ত্রীর সঙ্গে আমার প্রেম চলছে। শুনতে শুনতে গিয়ানকারলো স্থির হয়ে গেলেন।
এরপর তিনি তার স্ত্রী ন্যান্সিকে ডাকলেন। বসালেন পাশে। জানতে চাইলেন আমি যা বলছি তা কি সত্যি কিনা। ন্যান্সি স্বীকার করলো। এরপর গিয়ানকারলো এক বোতল শ্যাম্পেন নিলেন। ন্যান্সির জন্য আরও একটু খেয়ে নিলেন। আমার দিকে তিনি ঘুরে বললেন, ভেন আপনি যদি আমার স্ত্রী ও আমাকে বিষয়টি নিয়ে একটু কথা বলার জন্য সময় দেন তাহলে সেটা খুব ভাল উদ্যোগ হয়। আমি মনে করলাম এটা ভাল সিদ্ধান্ত। আমি উঠে দাঁড়ালাম। গিয়ানকারলো আমাকে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে গেলেন। তিনি বললেন, আপনি সত্য বলেছেন এ জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
দু’দিন পর ন্যান্সি তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলো। আমরা দু’জনে একটি সুন্দর পুরনো বাড়িতে উঠলাম। রোমের বাইরে ফ্রেজেন সমুদ্র সৈকতে এ বাড়িটি কিনেছিলাম। আমাদের প্রথম কয়েকটি মাস ছিল অতিরিক্ত প্রেমময়। আমরা তখন হাতে হাত রেখে সৈকতে দীর্ঘ পথ হাঁটতাম। বেশির ভাগ সময় রাতের খাবার খেতাম বাইরে। ন্যান্সি চাইতো আমি তার দিকেই মনোনিবেশ করি। কিন্তু আমি তো এমন নারী চাইনি। এ সময়ই আমার মধ্যে বিস্ময় সৃষ্টি হতে শুরু হলো- আমি কি গিয়ানকারলোর কাছ থেকে ন্যান্সিকে কেড়ে এনে ঠিক কাজ করেছি। এভাবে চলতে চলতে এক সময় আমার জীবনে এসে যায় ফারিয়া।