শীর্ষবিন্দু নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনঝি তথা ব্রিটেনের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকিকে কটাক্ষ করে বিতর্কে জড়ালেন ব্রিটেনের হাউস অফ কমন্স এর ডেপুটি স্পিকার ইলিনর লেইং।
ডেপুটি স্পিকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা টিউলিপকে তাঁর গর্ভাবস্থা প্রসঙ্গে কটু মন্তব্য করেছেন।
সংসদে বিতর্ক চলাকালে অনুমতি ছাড়া দুপুরের খাবার খেতে যাওয়ায় কনজারভেটিভ দল থেকে নির্বাচিত নারী ডেপুটি স্পিকার এলিনর লাইং টিউলিপকে তিরস্কার করে বলেন, আমাকে গর্ভবতী হওয়ার অজুহাত দেখাবেন না। শুধু এটা বলেই ক্ষান্ত হননি স্পিকার এলিনর, টিউলিপ গর্ভবতী হওয়ার ছুতো ব্যবহার করে সব নারীকে ছোট করেছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি!
সন্তান সম্ভবা টিউলিপ সিদ্দিককে তিরস্কার করায় যুক্তরাজ্য সংসদেও ডেপুটি স্পিকারের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় উঠেছে বৃটিশ সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে। ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছে, গত বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ পার্লামেন্টে পৌঁছন হ্যাম্পস্টেড-কিলবার্নের এমপি টিউলিপ। দুপুর আড়াইটা নাগাদ তিনি বক্তৃতা করেন এবং পৌনে ৩টে নাগাদ কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান।
একজন নারী ডেপুটি স্পিকারের এধরণের আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন একাধিক এমপি। বিষয়টি নিয়ে স্পিকারের কাছে অভিযোগ জানানো উচিৎ বলে টিউলিপকে বোঝান তারা। অথচ কোনো অভিযোগ না জানিয়ে উল্টো সৌজন্য বজায় রেখে খেতে যাওয়ার জন্য এলিনরের কাছে ক্ষমা চান বঙ্গবন্ধুর নাতনী ও শেখ হাসিনার বোনঝি টিউলিপ সিদ্দিক।
ওই ঘটনার আগে তখনও টিউলিপ ডেপুটি স্পিকারকে বলেননি যে, তিনি প্রেগনেন্ট বলেই খেতে গিয়েছেন। টিউলিপ সিদ্দিক ওই রুঢ় আচরণের জবাবে বেশ শান্ত ভাবে বলেন, হাউজ অব কমন্সের এ ধরণের রেওয়াজ যে আধুনিক যুগের সবার জন্যই বেমানান, সেটাই দেখলাম। আর সন্তান সম্ভবা নারী কিংবা অন্যান্য বিশেষ অবস্থার বেলায় এই রেওয়াজের অসাড়তা বলার অপেক্ষাই রাখে না। এমন অনেক জরুরি মুহূর্ত থাকে যখন প্রশাসনিক অনুমতি নেয়ার সময়-সুযোগ থাকে না। এধরণের জরুরি ব্যাপারগুলো বুঝতে হলে কমন সেন্স থাকাই যথেষ্ট।
ঘটনার সূত্রপাত গত বুধবার। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অফ কমন্স এ নিজের বক্তৃতার পরেই ডেপুটি স্পিকারের কাছে কিছুক্ষণের বিরতি চেয়ে কক্ষের বাইরে গিয়েছিলেন টিউলিপ। খাওয়া দাওয়া সেরে প্রায় ৪৫ মিনিট পরে তিনি ফিরে আসেন এবং ইলিনরের কাছে ক্ষমা চান। টিউলিপ জানান, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় তিনি একটানা বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারেন না। ইলিনর বলেন, ‘অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার অজুহাত আমাকে দেবেন না। টিউলিপ ফের ক্ষমা চাইলেও মন গলেনি ইলিনরের।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছে, গত বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ পার্লামেন্টে পৌঁছন হ্যাম্পস্টেড-কিলবার্নের এমপি টিউলিপ। দুপুর আড়াইটা নাগাদ তিনি বক্তৃতা করেন এবং পৌনে তিনটা নাগাদ কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। এর পরেই ইলিনর জানান, কোনও এমপি নিজের বক্তৃতার শেষে কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে পারেন না। নিয়মমতো তাঁকে পরবর্তী এক বা দু’জনের বক্তৃতা অবশ্যই শুনতে হবে।
টিউলিপ ফিরে আসার পরে ইলিনর তাঁকে বলেন, সাধারণ মানুষ ভাববেন, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় একজন মহিলা হাউসের কাজকর্ম ঠিকভাবে করতে পারেন না। এটা ঠিক নয়। ডেপুটি স্পিকারের কথায়, টিউলিপ মহিলাদের অপমান করেছেন। প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে নিজের সন্তানের জন্মের এক সপ্তাহের মধ্যেই কাজে যোগ দিয়েছিলেন ইলিনর।
গোটা ঘটনায় মর্মাহত টিউলিপ। তিনি বলেন, অন্তঃসত্ত্বাদের নিজেদের মতো থাকতে দেওয়া উচিত। সেদিন পার্লামেন্ট কক্ষে হাজির অনেকেই টিউলিপকে সমর্থন করেছেন। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় টিউলিপও সমালোচনার মুখে পড়েছেন। এক মহিলা টুইটারে লিখেছেন, ইলিনর যা করেছেন, তা ঠিক। টিউলিপ, নিজের কাজ করুন। প্রয়োজনে ব্যাগে খাবার রাখুন। আপনি একজন এমপি। সে কথা ভুলে যাবেন না।