গ্লোবাল করাপশন ব্যারোমিটারে বাংলাদেশের প্রতিবেদনের তথ্যের সাথে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই)ওয়েবসাইটের তথ্যের অসামঞ্জস্যতার যে অভিযোগ উঠেছে তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছে দুর্নীতি বিরোধী এ প্রতিষ্ঠানটি। জার্মানীর বার্লিনস্থ টিআই সচিবালয় থেকে পাঠানো এক বার্তায় আন্তর্জাতিক এ প্রতিষ্ঠানটির দাবি, বাংলাদেশে যেভাবে জরিপের উপাত্ত পরিবেশিত হয়েছে তা সঠিক।
বার্লিন থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআই জানায়, আমাদের জরিপে উত্তরদাতাদের ১২টি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির মাত্রা নির্ণয়ে ১-৫ স্কেলে অবস্থান নির্দেশের অনুরোধ করা হয়েছিল। এখানে স্কেলের ১ অর্থ মোটেই দুর্নীতিগ্রস্ত নয়’ এবং ৫ অর্থ চরম দুর্নীতিগ্রস্ত। অর্থাৎ ১ ছাড়া অন্য সকল স্কোর প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে স্বল্প বা উচ্চমাত্রায় দুর্নীতিগ্রস্ত বলে বুঝতে হবে। জরিপে প্রাপ্ত এই উপাত্তকে ব্যাখ্যা করার একটি উপায় হল স্কোর ৪ ও ৫ এর যোগফলের মাধ্যমে উত্তরদাতাদের কত শতাংশ কোন প্রতিষ্ঠানকে প্রবলভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত মনে করছেন, তা নিরূপণ করা, যা টিআই তার উপস্থাপনায় করেছে।
অন্যদিকে আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে কতটুকু দুর্নীতিগ্রস্ত বলে উত্তরদাতারা মনে করেন তা ২, ৩, ৪ এবং ৫ স্কোরকে যোগ করে নিরূপণ করা, যা টিআই বাংলাদেশ করেছে। জরিপের উপাত্তকে পরিবেশনের ক্ষেত্রে উভয় উপস্থাপনাই সঠিক বলে বিবেচিত।
এদিকে, টিআইয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া গ্লোবাল করাপশন ব্যারোমিটার ২০১৩’ শিরোনামের জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলকে ৪৫ শতাংশ মানুষ দুর্নীতিগ্রস্ত মনে করে। কিন্তু ৯ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করে প্রকাশ করা টিআইবির প্রতিবেদনে এই হার ৯৩ শতাংশ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। একইভাবে টিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশ ও বিচার বিভাগকে দুর্নীতিগ্রস্ত মনে করে বাংলাদেশের যথাক্রমে ৬৪ ও ৫৯ শতাংশ মানুষ। অথচ টিআইবির প্রতিবেদনে সেগুলোকে যথাক্রমে ৯৩ ও ৮৯ শতাংশ উল্লেখ করা হয়েছে। এ অসামঞ্জস্যতার কারণে এ জরিপ নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে এ জরিপকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করা হয়।
জরিপ প্রকাশের পরই সরকারের দায়িত্বশীল কয়েকজন টিআই-এর প্রতিবেদন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাদের দাবি, বাংলাদেশের সঙ্গে টিআই-এর ওয়েবসাইটের তথ্যের অসামঞ্জস্যতা রয়েছে।
দুর্নীতির ব্যাপারে বাংলাদেশসহ ১০৭টি দেশের জনগণের অভিজ্ঞতা ও দৃষ্টিভঙ্গি ভিত্তিক এ যাবৎকালের সর্ববৃহৎ জরিপ গ্লোবাল করাপশন ব্যারোমিটার গত ৯ জুলাই বিশ্বব্যাপী প্রকাশ করে টিআই। উক্ত প্রতিবেদনের বৈশ্বিক প্রকাশের দায়িত্ব ছিল জার্মানির বার্লিনস্থ টিআই সচিবালয়ের। অন্যদিকে টিআই বাংলাদেশসহ জাতীয় চ্যাপ্টারসমূহ নিজ নিজ দেশে জরিপের ফল প্রকাশ করে।
Leave a Reply