ব্রিটেনে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি এই সম্ভাব্য সংকটের একটি কারণ হলেও কোভিড মহামারির কারণে স্বাস্থ্যসেবা খাতের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
ওয়ান ক্যানসার ভয়েস নামক সম্মিলিত ওই গোষ্ঠীর তথ্য অনুযায়ী, ২০৪০ সালের মধ্যে ৬০ লাখের বেশি নতুন ক্যান্সার রোগী শনাক্ত হতে পারে।
২০৪০ সালের মধ্যে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে নতুন একটি প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে।
৬০টির বেশি দাতব্য সংস্থার যৌথ ওই প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, সম্ভাব্য ওই ঝুঁকিতে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হবে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ জনগোষ্ঠী।
প্রতিবেদনটিতে সামগ্রিক চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি স্বাস্থ্যখাতে জাতিগত বৈষম্যের এক উদ্বেগজনক চিত্র প্রকাশ পেয়েছে।
যদিও শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠীর তুলনায় অনেক জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর মধ্যে ক্যান্সারের সামগ্রিক ঘটনা কম, নির্দিষ্ট কিছু ক্যান্সারের প্রকোপ তাদের মধ্যে বেশি। উপরন্তু, এই সম্প্রদায়গুলো স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বাধার সম্মুখীন হয়।
উদাহরণস্বরূপ, ২০২৪ সালের শেষের দিকে প্রকাশিত একটি প্রধান গবেষণা থেকে জানা যায় যে ইংল্যান্ডে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি পুরুষদের মধ্যে ফুসফুসের ক্যান্সারের হার সবচেয়ে বেশি। এই ফলাফলটি দারিদ্র্য এবং ধূমপানের হারের মতো আর্থ-সামাজিক কারণগুলোর সাথে স্বাস্থ্যের ফলাফলের জটিল সম্পর্ককে তুলে ধরে।
এই পরিস্থিতিতে সরকারকে একটি নতুন জাতীয় ক্যান্সার পরিকল্পনা প্রবর্তনের মাধ্যমে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
২০২৯ সালের মধ্যে ক্যান্সারের অপেক্ষার সময়সীমা পূরণ করা, উন্নত স্ক্রিনিং কর্মসূচির সঙ্গে একটি নতুন প্রারম্ভিক রোগ নির্ণয় লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা এবং শক্তিশালী ক্যান্সার প্রতিরোধ নীতি প্রবর্তন করার প্রতি জোর দেওয়া হয়।
পাশাপাশি, রোগীর স্বাস্থ্যসেবায় বিদ্যমান বৈষম্যগুলো সরাসরি মোকাবিলা করা, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে সকল রোগীর জন্য উন্নত প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা এবং ক্যান্সার আক্রান্তদের জন্য আরও ভালো সহায়তা প্রদান করার প্রতিও গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
ব্রিটিশ সরকারের একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন যে একটি নতুন জাতীয় ক্যান্সার পরিকল্পনা আসছে, যা স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত করবে এবং প্রথম ধূমপানমুক্ত প্রজন্ম গড়ে তুলবে।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূতদের ক্ষেত্রে প্রায়শই শেষ পর্যায়ে গিয়ে ক্যান্সার নির্ণয় হয়। এই বিলম্বের পেছনে বেশ কিছু পদ্ধতিগত বাধা রয়েছে, যার মধ্যে স্ক্রিনিং কর্মসূচিতে কম অংশগ্রহণ, ভাষার প্রতিবন্ধকতা, সাংস্কৃতিকভাবে সংবেদনশীল স্বাস্থ্য শিক্ষার অভাব এবং স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ অবিশ্বাস বা ভীতি উল্লেখযোগ্য।
Leave a Reply